পিনকন-কাণ্ডে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক পুলিশ-কর্তার দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলেছে রাজস্থান পুলিশ। জয়পুরের স্পেশ্যাল অপারেশনস গ্রুপের (এসওজি) অফিসারদের দাবি, কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্তাব্যক্তির সঙ্গে পিনকনের কর্তাদের নিয়মিত ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল। পিনকন কর্তাদের সাহায্যে তাঁরা বিপুল পরিমাণ বাতিল হয়ে যাওয়া ১০০০ ও ৫০০ টাকার নোট বদল করেছিলেন বলেও এসওজি গোয়েন্দাদের অভিযোগ। ইতিমধ্যেই এই মামলার তদন্তে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং সেবি-র সাহায্য চেয়েছে এসওজি। এ বার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের প্রতিলিপি পাঠানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকে।
পিনকনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা গত বছর ৮ নভেম্বর নোটবন্দির পরে বাজার থেকে বাতিল হওয়া নোট তুলেছিল এবং খাতায় কলমে তা আগের তারিখের (ব্যাক ডেট) আদায় বলে দেখিয়েছিল। এ জন্য বাতিল নোটের মালিকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের কমিশনও নিয়েছিল তারা।
এসওজি সূত্রে বলা হচ্ছে, নোটবন্দির আগে থেকেই অভিযোগের ভিত্তিতে পিনকন কর্তাদের ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছিল। সেই সব ফোন কল এবং ধৃত পিনকন কর্তাদের জেরা করে একাধিক পুলিশ অফিসারের সঙ্গে পিনকনের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের হদিশ মিলেছে বলে ওই সূত্রের দাবি। সূত্রটি জানাচ্ছেন, রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের এক পদস্থ কর্তা, সম্প্রতি ওসি পদ থেকে কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদে উন্নীত হওয়া দুই অফিসার, বন্দর এলাকার দু’টি থানার ওসি এবং মধ্য কলকাতার একটি থানার এসআই পিনকনের মাধ্যমে প্রায় ৫০ কোটি টাকার বাতিল নোট পাল্টেছিলেন।
রাজস্থান পুলিশের দাবি, নোট বদলের প্রধান কেন্দ্র ছিল কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি ও রেডক্রস প্লেসে পিনকনের অফিস। এই দুই ওয়ার রুমের কান্ডারি ছিলেন পিনকনের কর্ণধার মনোরঞ্জন রায় ও আর এক ডিরেক্টর রাজকুমার রায়। বৃহস্পতিবার রাতে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে মনোরঞ্জন রায়-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। রাজকুমারের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে রাজস্থান পুলিশ। এ ছাড়া আরও দুই পিনকন-কর্তাকে প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। এসওজি-র আইজি এম এন দীনেশ বলেন, ‘‘ওই দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলবে বলে আমাদের ধারণা।’’