স্বার্থে লাগলেই ঘা, পুলিশ কোণঠাসা

দুই হুমকির মধ্যবর্তী সময়ে জেলায় জেলায় এবং খাস কলকাতায় ঘটে গিয়েছে পুলিশের উপরে একের পর এক হামলার ঘটনা। পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে গ্রামবাংলার চেহারা কী হবে, তা নিয়ে আশঙ্কায় সকলেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:০১
Share:

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের হুঙ্কার ছিল, ‘পুলিশকে বোম মারুন!’ পাঁচ বছর পেরিয়ে আরও একটা পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতির সময়ে দাঁড়িয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ হুমকি দিলেন, তাঁদের দলের কর্মীরাও পুলিশকে মারতে পারেন। দুই হুমকির মধ্যবর্তী সময়ে জেলায় জেলায় এবং খাস কলকাতায় ঘটে গিয়েছে পুলিশের উপরে একের পর এক হামলার ঘটনা। পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে গ্রামবাংলার চেহারা কী হবে, তা নিয়ে আশঙ্কায় সকলেই।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে সোমবারই পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এক যুব তৃণমূল কর্মীর খুনের ঘটনায় ধৃত এক জনকে ছাড়িয়ে আনার জন্যই হামলা হয়েছিল পুলিশের উপরে। হামলার দায়ে মঙ্গলবার ৭ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বাসন্তী এবং ক্যানিং এলাকায় শাসক দলের নানা শিবিরের মধ্যে লাগাতার হানাহানির ঘটনায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীও। দলের দুই বিধায়ক শওকত মোল্লা এবং জয়ন্ত নস্করের ভূমিকায় একেবারেই খুশি নন তৃণমূল নেত্রী।

বাসন্তী অবশ্য কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত কয়েক বছরে দুবরাজপুর থেকে দেগঙ্গা, নানা জায়গায় হামলার মুখে পড়তে হয়েছে পুলিশকে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই কাঠগড়ায় শাসক দল।

Advertisement

আরও পড়ুন: মেয়রের সঙ্গেই রক্ষীদের জেরা সিবিআইয়ের

পিছিয়ে থাকতে চাইছে না বিজেপিও! বাউড়িয়ায় দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু বলেছেন, ‘‘তৃণমূল পুলিশকে মারলে আমরা কেন পারব না?’’ বিতর্কিত মন্তব্য দিলীপবাবুর এই প্রথম নয়। তবে বিরোধী শিবিরের একাংশের ব্যাখ্যা, শাসক দলের হামলার মুখে পড়ে প্রশাসনের কাছে কোনও সাহায্যই মিলছে না। একের পর এক ভোট ‘প্রহসন’ হচ্ছে। এই অবস্থায় কর্মীদের মনোবল ধরে রাখতে পাল্টা মারের দাওয়াই দিয়েছেন দিলীপবাবু।

শাসক-বিরোধীর সাঁড়াশি চাপে করুণ অবস্থা নিচুতলার পুলিশের। কোথাও বালি খাদান, কোথাও ভেড়ি, কোথাও সিন্ডিকেট নিয়ে বিরোধের মাঝে পড়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত তাঁদের। বিরোধীদের অভিযোগ, কোনও ঘটনাতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক স্তরে কড়া ব্যবস্থা নেয়নি শাসক দল। যদিও তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘‘আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কোনও কর্মীকেই দেওয়া হয়নি।’’ আর সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের কটাক্ষ, ‘‘বাংলার অবস্থা এখন এলোমেলো করে দে মা, লুটেপুটে খাই। একটা দল এলো, অন্যটা মেলো। দুইয়ে মিলে বাংলায় তারা কেলো করছে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement