জোড়া জটিলতায় দেরি রক্তপরীক্ষায়

মুখে মুখে বলা হচ্ছে, জ্বরের রোগীর দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের লিখিত নির্দেশ নেই। সরকারি হাসপাতালে দ্রুত রক্ত পরীক্ষার পরিকাঠামোও তৈরি হয়নি।

Advertisement

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

মুখে মুখে বলা হচ্ছে, জ্বরের রোগীর দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের লিখিত নির্দেশ নেই। সরকারি হাসপাতালে দ্রুত রক্ত পরীক্ষার পরিকাঠামোও তৈরি হয়নি।

Advertisement

এটা প্রথম সমস্যা হলে দ্বিতীয় সমস্যা সাহায্য না-নেওয়ার সরকারি মানসিকতা। দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড আন্ত্রিক ডিজিজ (নাইসেড)। কিন্তু গত দু’বছরের মতো এ বারেও তাদের সাহায্য নিতে প্রবল অনীহা রাজ্য সরকারের!

এই দুই সমস্যায় দেরি হচ্ছে রক্তপরীক্ষায়। ফলে ঠিক সময়ে ধরা পড়ছে না রোগ। রোগীর দ্রুত অবনতি হচ্ছে। নাইসেডের অধিকর্ত্রী শান্তা দত্ত জানান, স্বাস্থ্য ভবন রক্ত পরীক্ষা করতে বললেই সঙ্গে সঙ্গে সেটা করে রিপোর্ট পাঠানো হবে। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের তরফে খুব সামান্যই সহযোগিতা চাওয়া হয়।

Advertisement

ডেঙ্গি মোকাবিলায় এ বার বছরের শুরুতেই স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নেয়, রক্ত দ্রুত পরীক্ষা করতে হবে। স্বাস্থ্যসচিব নির্দেশ দেন, রোগী ভর্তি হলে ফেলে রাখা যাবে না। শনি-রবিবারেও জরুরি ভিত্তিতে পরীক্ষা করতে হবে। সব মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষেরাও নির্দেশ দেন, রক্ত দ্রুত পরীক্ষা করাতে হবে। কিন্তু সব নির্দেশই মৌখিক। লিখিত বিজ্ঞপ্তি নেই। ফলে খরচ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে বুঝেই দ্রুত রক্তপরীক্ষার ঝুঁকি নিচ্ছে না হাসপাতাল।

বর্ষায় রাজ্য জুড়ে জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। সরকারি হাসপাতালে রোগী বাড়ছে। অভিযোগ, রক্তপরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে ভর্তি হওয়ার বেশ কয়েক দিন পরে। সরকারি হাসপাতালের কর্তারা জানান, লিখিত নির্দেশ না-থাকায় রক্তপরীক্ষা নিয়ে জটিলতা বেড়েছে। ডেঙ্গি পরীক্ষার একটি কিটে ৯৬ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। ৯৬ জনের নমুনা না-মিললে পরীক্ষার জন্য রক্ত পাঠানো হয় না। তাই সময় লাগছে রক্তপরীক্ষায়। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, এলাইজা পদ্ধতিতে আইজিএম পরীক্ষায় কিট-পিছু সরকারের খরচ হয় ন’হাজার টাকা। রোগী-পিছু কমবেশি ৯৩ টাকা। এনএস১ পরীক্ষায় কিট-প্রতি খরচ ১২ হাজার টাকা। রোগী-পিছু সরকারের খরচ ১২৫ টাকা। হাসপাতাল-কর্তাদের একাংশ জানান, ন্যূনতম ক’জনের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো যায়, তার লিখিত নির্দেশ নেই। ফলে কেন অতিরিক্ত কিট ব্যবহার করা হল, সেই প্রশ্ন উঠলে বছর শেষে অডিটের সময় তাঁরা বিপদে পড়তে পারেন।

সঙ্কটের কথা মানতে রাজি নয় স্বাস্থ্য ভবন। তারা জানাচ্ছে, মৌখিক নির্দেশই যথেষ্ট। এবং তাতেই তৎপরতার সঙ্গে কাজ হচ্ছে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন