OBC Certificate Case in Supreme Court

জয়েন্টের ফল প্রকাশিত হলেও ওবিসি জট এখনও কাটেনি, সুপ্রিম কোর্টে কী অবস্থায় সেই মামলা? আবার কবে শুনানি?

জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেধাতালিকা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেই শুক্রবার জয়েন্টের ফল প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু ওবিসি সংক্রান্ত জটিলতা এখনও কাটেনি। মামলা বিচারাধীন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৫ ২০:৫১
Share:

সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত মামলা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মিলতেই শুক্রবার রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট বোর্ড। রাজ্যের অন্য অনগ্রসর সম্প্রদায় (ওবিসি) শংসাপত্র সংক্রান্ত মামলার জটিলতায় জয়েন্টের ফলপ্রকাশ আটকে ছিল। সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। ফলে জয়েন্টের ফলপ্রকাশে আর কোনও বাধা ছিল না। কিন্তু শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশে ওবিসি নিয়ে সামগ্রিক জটিলতা কাটল না। শুক্রবারের নির্দেশ কেবল জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ওবিসি-র মূল মামলাটি শুনবে শীর্ষ আদালত।

Advertisement

২০২৪ সালের ২২ মে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ ২০১০ সালের পরে দেওয়া সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করে দিয়েছিল। আদালত জানিয়েছিল, ২০১০ সালের আগে দেওয়া শংসাপত্রগুলিই কেবল বৈধ। রাজ্যকে নতুন করে এ নিয়ে সমীক্ষা করতে হবে এবং নতুন ওবিসি তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। নতুন তালিকা রাজ্য আইনসভায় পাশ করানোর নির্দেশও দিয়েছিল আদালত। হাই কোর্টের এই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে আগেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই নির্দেশে শীর্ষ আদালত কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে এর পর রাজ্য সমীক্ষা করে এবং ১৪৪টি সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকাভুক্ত করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে।

গত ১৭ জুন রাজ্যের এই কার্যকলাপেও স্থগিতাদেশ দেয় হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের যুক্তি ছিল, ওবিসি তালিকা তৈরি করে রাজ্যকে আইনসভার অনুমোদন নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু রাজ্য তা করেনি। ফলে এই সংক্রান্ত সকল বিজ্ঞপ্তির উপর হাই কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে দেয়। রাজ্য আবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। সরকারের আইনজীবীদের বক্তব্য ছিল, ওবিসি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে অনেক নিয়োগ এবং ভর্তিপ্রক্রিয়া আটকে আছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান প্রয়োজন। এর পর হাই কোর্টের ১৭ জুনের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

কেন স্থগিতাদেশ? শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, হাই কোর্ট নতুন ওবিসি তালিকায় আইনসভার অনুমোদন নিতে বলেছিল। কিন্তু রাজ্য এ ক্ষেত্রে তার এগ্‌জ়িকিউটিভ ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে। রাজ্যের এই ক্ষমতার উপর আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এই ক্ষমতাকে মান্যতা দিতে হবে। তাই হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৯ সেপ্টেম্বর। রাজ্যের আইনজীবীদের সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহে মামলাটি শুনানির জন্য চেষ্টা করা হতে পারে। তবে সেপ্টেম্বরের আগে শুনানির সম্ভাবনা কম।

ওবিসি নিয়ে মামলার মধ্যেই জয়েন্ট এন্ট্রান্স নিয়ে আলাদা করে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। জয়েন্টের ফলপ্রকাশের কথা ছিল গত ৭ অগস্ট। কিন্তু ওবিসি জটিলতার কারণে তা করা যায়নি। এর আগে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের একক বেঞ্চ জয়েন্টের মেধাতালিকা বাতিল করে নতুন করে তালিকা প্রস্তুত করতে বলেছিল। তার জন্য সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দেওয়ার আগে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও কেন সেই নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি? প্রশ্ন তোলে উচ্চ আদালত। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আদালত অবমাননার মামলাও করা হয়। তাতে হাজিরা দিতে হয় শিক্ষা দফতরের দুই আধিকারিককে। এর পর গত ৭ অগস্ট হাই কোর্ট আবার নির্দেশ দেয়, ১৫ দিনের মধ্যে জয়েন্টের নতুন মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে। ২০১০ সালের আগে যে ৬৬টি সম্প্রদায় ওবিসি তালিকাভুক্ত ছিল, তার ভিত্তিতে তৈরি হবে তালিকা। হাই কোর্টের সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে প্রথমে ডিভিশন বেঞ্চে এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। তাতেই শুক্রবার স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement