ত্রাণ শিবিরে এড়ানো গেল না ‘আমরা-ওরা’

সিপিএমের উদ্যোগে খোলা হয়েছিল ত্রাণ শিবির। দেখাদেখি, ত্রাণ শিবির খুলে বসল তৃণমূলও। একই গ্রামে দুই শিবিরের দূরত্ব মেরেকেটে কয়েকশো মিটার!

Advertisement

নির্মল বসু

বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৬ ০৩:৪০
Share:

সিপিএমের উদ্যোগে খোলা হয়েছিল ত্রাণ শিবির। দেখাদেখি, ত্রাণ শিবির খুলে বসল তৃণমূলও। একই গ্রামে দুই শিবিরের দূরত্ব মেরেকেটে কয়েকশো মিটার!

Advertisement

ত্রাণ শিবির নিয়ে রাজনীতির এ হেন প্যাঁচ-পয়জারের অবশ্য ধার ধারেন না ঘরপোড়া মানুষ। দুই শিবিরেই দিব্যি পাত পেড়ে খাচ্ছেন সব দলের লোকজন। আর বলছেন, ‘‘গরিবের আবার দল! পেটের জ্বালা বড় জ্বালা। যে খেতে দেবে, সেখানেই যাব।’’

বুধবার বসিরহাটের পানিগোবরায় রাজনৈতিক হিংসায় ঘরহারা হয়েছেন কয়েকশো মানুষ। দুর্গত মানুষ শুক্রবার থেকে রান্না করা খাবার পাচ্ছেন পার্শ্ববর্তী বাদুড়িয়ার রাজবেড়িয়ায় ত্রাণ শিবিরে। সিপিএমই যার মূল উদ্যোক্তা। দলের তরফে দাবি করা হয়েছে, গ্রামের মানুষের উদ্যোগেই চলছে শিবির। রাজনীতির রঙ না দেখে সকলকেই খাবার দেওয়া হচ্ছে। শনিবার প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ‘সেভ ডেমোক্রেসি’র একটি দল শিবির ঘুরে দেখে।

Advertisement

তৃণমূল নেতা তথা বাদুড়িয়ার পুরপ্রধান তুষার সিংহ দাবি, ওই শিবিরে তৃণমূলের লোকজন ঠিক মতো খাবার পাচ্ছেন না। সে কারণেই নতুন শিবির খুলতে হয়েছে গ্রামের মানুষকে।

ঘটনাচক্রে, শনিবার থেকে শিবির খুলেছে প্রশাসনও। পানিগোবরার একটি প্রাথমিক স্কুলে ওই শিবির থেকে রান্না করা খাবার ছাড়াও হাঁড়ি-কড়াই, রান্নার সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি শিবিরের বদলে সকলকে সরকারি শিবিরে আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে।

এখানেই উঠছে অন্য প্রশ্ন।

সিপিএমের ত্রাণ শিবিরে না হয় ঠিকঠাক খাবার পাচ্ছিলেন না তৃণমূলের দুর্গতরা। কিন্তু প্রশাসন নিজেই যেখানে ত্রাণ শিবির চালু করেছে, সেখানে পৃথক শিবির খোলার কী দরকার পড়ল?

তুষারবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘প্রশাসনের এই উদ্যোগ আমাদের জানা ছিল না। প্রয়োজন না থাকলে শিবির বন্ধ করে দেওয়া হবে।’’

এ দিন পানিগোবরায় ঘটনাস্থল ঘুরে দেখতে চেয়েছিলেন অশোকবাবুরা। কিন্তু পুলিশ জানায়, ১৪৪ ধারা জারি থাকায় ঢোকা যাবে না ওই এলাকায়।

বিষয়টি জানার পরে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘অশোকবাবু মাত্র একজনকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন এলাকায়। তাতে কী করে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ হয়?’’ তাঁর কথায়, ‘‘এ থেকেই স্পষ্ট, রাজ্যে গণতন্ত্র নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন