টালিগঞ্জ ফাঁড়ি এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।
প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে হামলা হয়েছিল শনিবার। মানকরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তি ভাঙা হল রবিবার। দুই ঘটনাকেই আসন্ন উপনির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারের হাতিয়ার করে তুলল কংগ্রেস ও বামেরা। বিধান ভবনে হামলার ঘটনায় এ দিনই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাফাল-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে রায়ের পরে দেশ জুড়েই কংগ্রেস দফতরের সামনে বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। মিছিল করে এসে শনিবার বিধান ভবনে ঢিল ছোঁড়া, ফ্লেক্স ছেঁড়া, রাহুল গাঁধীর ছবিতে কালি লাগানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। কালি ছেটানো হয়েছে পুলিশকর্মীদের গায়ে। হেনস্থার হাত থেকে রেহাই পাননি কংগ্রেস দফতরের বর্ষীয়ান কেয়ার টেকারও। পুলিশ থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে দফতরে হামলা চালাতে দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতারা। বিশেষত, সনিয়া গাঁধী-রাহুলদের এসপিজি নিরাপত্তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যুব কংগ্রেসের বিক্ষোভ মিছিল বিজেপি দফতরের বেশ কিছুটা আগেই আটকে দিয়ে ৫২ জনকে গ্রেফতার করায় বিধান ভবনের ক্ষেত্রে পুলিশি ‘নিষ্ক্রিয়তা’র অভিযোগ উঠেছিল। বিধান ভবনে সিসি ক্যামেরা আছে। পুলিশ চাইলে ফুটেজ দিয়ে সাহায্য করার কথাও বলেছিলেন কংগ্রেস নেতারা। লালবাজারের কর্তারা অবশ্য এ দিন জানিয়েছেন, ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিধান ভবনে হামলার ছবি দেখিয়েই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ‘‘জ্যোতি বসুর ভাষায় ‘একটি অসভ্য, বর্বর দল’! এরাই আমাদের কয়েকটি রাজ্য কমিটির ও কেন্দ্রীয় কমিটির অফিস বার বার আক্রমণ করেছিল। এখনও ত্রিপুরায় সর্বস্তরের অফিস আক্রমণ করছে। ঠিক যেমন বাংলায় আগে তৃণমূল করেছে।’’ সূর্যবাবুর আহ্বান, ‘‘রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে আসন্ন উপনির্বাচনে বিজেপি-তৃণমূলকে পরাস্ত করুন।’’
আরও পড়ুন: কলকাতা গেলেন অসুস্থ রবি
পার্ক সার্কাসে কংগ্রেসের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেছেন, ‘‘বিদ্যাসাগর কে, বিধান রায় কে, এই জ্ঞানটুকুও এই সব দুষ্কৃতীর নেই। যারা এখনও বাঙালি হয়েই উঠতে পারেনি, তারা কী ভাবে বাংলায় সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখে?’’ তৃণমূলের তরফে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমেরও মন্তব্য, ‘‘ভারত এবং বাংলার সংস্কৃতি সম্পর্কে কোনও ধারণা বিজেপির নেই।’’ বিধান ভবনে বিক্ষোভের কথা স্বীকার করলেও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, মূর্তি ভাঙার ‘সংস্কৃতি’ তাঁদের নয়। পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর, উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর-সহ নানা জায়গায় এ দিন প্রতিবাদে নেমেছিল কংগ্রেস। কলকাতায় পার্ক সার্কাস ও মল্লিকবাজার মোড়ে পথ অবরোধ করেন কংগ্রেস কর্মীরা। বিধান ভবনে হামলা ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মিছিল হয়েছে টালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে চারু মার্কেট পর্যন্ত।