লোকসভা ভোটের আগে মালদহে পুরনো গড় সামলাতে মরিয়া হলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
বাংলা থেকে এখন কংগ্রেসের হাতে যে চারটি লোকসভা আসন, তার সবক’টিই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলায়। তার মধ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর জেলা মুর্শিদাবাদে একের পর এক বিধায়ককে দলে টানছে তৃণমূল। শাসক দলের দিকে পা বাড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়ায় সরিয়ে দিতে হয়েছে আরও এক বিধায়ক তথা জেলা সভাপতি আবু তাহের খানকে। মুর্শিদাবাদে জেলা পরিষদও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করেছে তৃণমূল, মালদহে অবশ্য লড়াই হয়েছে। কিন্তু মালদহে আবার বিজেপির উত্থান ঘটছে দ্রুত। ওই জেলার দুই কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী ও মৌসম বেনজির নুর তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে জল্পনা গতি পেয়েছে। এমতাবস্থায় তাঁদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনায় বসছেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতারা।
ডালুবাবু ও মৌসম, দু’জনেই অবশ্য বলছেন, তাঁদের দলবদল নিয়ে ‘বিভ্রান্তি’ ছড়ানো হচ্ছে। দু’দিন আগে বিধান ভবনে এআইসিসি-র তরফে বাংলায় কংগ্রেসের ভারপ্পাপ্ত নেতা গৌরব গগৈয়ের সঙ্গে শাখা সংগঠনের নেতৃত্বের বৈঠকে আগাগোড়া ছিলেন মৌসম। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূলের রাজনীতির জন্যই কী ভাবে মালদহে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে। গৌরবের সঙ্গে দলের সাংসদদের বৈঠকে এসেছিলেন ডালুবাবু। তাঁর সঙ্গে গৌরব ও অধীরবাবুর কথা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ওই বৈঠক ছাড়াও বিধান ভবনের বাইরে অন্যত্র প্রদেশ কংগ্রেসের কয়েক জন বর্ষীয়ান নেতা কথা বলেছেন ডালুবাবু ও মৌসমের সঙ্গে। তাঁদেরও দাবি, দুই সাংসদ কোনও ভাবেই কংগ্রেস ছাড়ছেন না। বরং, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
আগামী লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের রথ রুখে দেওয়ার জন্য বিরোধীদের নিয়ে জোট বাঁধার কাজে হাত দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। বিজেপির মোকাবিলায় কংগ্রেসের হাতে অন্যতম তুরুপের তাস হতে চলেছে সংখ্যালঘু ভোট। সেই অঙ্ক মাথায় রেখেই মালদহে জমি বাঁচাতে কংগ্রেস নেতাদের মরিয়া হতে হচ্ছে।
তৃণমূলের পর্যবেক্ষক হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীই মুর্শিদাবাদ ও মালদহে কংগ্রেস ‘ভাঙা’র কাজ করছেন। আবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, কংগ্রেস তলে তলে বিজেপিকে সাহায্য করছে! যার জবাবে দল ভাঙানোর উদাহরণ দিয়ে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান পাল্টা বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের কোন কোন নেতা-মন্ত্রী তলায় তলায় বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, মুখ্যমন্ত্রী কি জানেন? বাংলায় বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা তো তৃণমূলই করেছিল!’’