পাহাড় নিয়ে রাজ্য-কেন্দ্রকে দুষল কংগ্রেস

কংগ্রেসের দাবি, নেপালি ভাষার স্বীকৃতি থেকে শুরু করে হিল কাউন্সিল এবং শেষ পর্যন্ত জিটিএ- কংগ্রেসের হাত ধরেই পাহাড়ে যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে এসেছে। জিটিএ-ও ইউপিএ সরকারের আমলে হয়েছে। কিন্তু তারপর থেকে যেভাবে জিটিএর সাংবিধানিক নিয়মকানুন ভাঙা হয়েছে তাতে পাহাড়ের মানুষের স্থায়ী সমাধান সম্ভব হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫২
Share:

বার্তা: ররিবার শিলিগুড়িতে প্রদেশ কংগ্রেসের ইস্তেহার কমিটির বৈঠকে সাংসদ অভিজিৎ মুখ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

জিটিএর মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও নির্বাচন না করার জেরেই পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধান এখনও মিলছে না বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। এর জন্য কেবল রাজ্য সরকারই নয়, কেন্দ্রীয় সরকারকেও দুষেছে কংগ্রেস। ররিবার শিলিগুড়িতে প্রদেশ কংগ্রেসের ইস্তেহার কমিটির বৈঠকে পাহাড়ে স্থায়ী সমস্যার সমাধানের বিষয়টিও উঠে আসে। ইস্তেহার কমিটির চেয়ারম্যান তথা সাংসদ অভিজিৎ মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা পাহাড়ের অশান্তি পাকিয়ে নয়, সমস্ত মানুষকে সঙ্গে নিয়েই পাহাড়ে শান্তির বাতাবরণ তৈরি করতে চাই পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই।’’

Advertisement

কংগ্রেসের দাবি, নেপালি ভাষার স্বীকৃতি থেকে শুরু করে হিল কাউন্সিল এবং শেষ পর্যন্ত জিটিএ- কংগ্রেসের হাত ধরেই পাহাড়ে যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে এসেছে। জিটিএ-ও ইউপিএ সরকারের আমলে হয়েছে। কিন্তু তারপর থেকে যেভাবে জিটিএর সাংবিধানিক নিয়মকানুন ভাঙা হয়েছে তাতে পাহাড়ের মানুষের স্থায়ী সমাধান সম্ভব হয়নি। দলের অভিযোগ, রাজ্য সরকার তো বটেই বিজেপি’র কেন্দ্রীয় সরকারও পাহাড়ের সমস্যা জিইয়েই রাখতে চেয়েছে। মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি শঙ্কর মালাকার দাবি করেন, ‘‘জিটিএ ইউপিএ সরকারের আমলে তৈরি হলেও তার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওযার পর অসাংবিধানিক ভাবে তা সম্প্রসারণ হয়েছে।’’ কংগ্রেসের প্রদেশ নেতারা ইঙ্গিত দেন, যেহেতু জিটিএ কেন্দ্র-রাজ্য এবং পাহাড়ের প্রতিনিধিদের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পরে চালু হয়েছিল, তাই জিটিএকে বিধি ভেঙে সম্প্রসারণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারও প্রশ্ন তোলেনি, কোনও পদক্ষেপও করেনি।

সম্প্রতি দার্জিলিং লোকসভা আসনে সর্বসম্মত প্রার্থীর ঘোষণা করেছেন। এ নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের কোনও আলোচনা হয়নি বলেই জানিয়েছেন শঙ্করবাবুরা। পাহাড়ে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও এআইসিসিও সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন শঙ্করবাবুরা।

Advertisement

এদিনের বৈঠকে পাহাড়ের প্রাক্তন সেনাদের প্রতিনিধিরা ছাড়াও এসেছিলেন নানা গোষ্ঠীর মানুষ। তাদের সঙ্গে কথা বলে কংগ্রেস ঠিক করেছে, রায়গঞ্জে এইমসের দাবি থেকে না সরে শিলিগুড়িতে আরও একটি এইমস করার প্রতিশ্রুতিও ইস্তেহারে রাখা হচ্ছে। কারণ সম্প্রতি আরও ২২টি এইমস করার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি এবং নেপাল, ভূটান বাংলাদেশের রোগীদের জন্যও কৌশলগত অবস্থানের কারণে শিলিগুড়িতে একটি এইমসের দাবি তুলছে কংগ্রেস। নেতারা জানান, শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে একটি আলাদা রেলওয়ে জোন অথবা আলাদা ডিভিশন তৈরির প্রতিশ্রুতিও রাখা হবে। কোচবিহার বিমানবন্দর চালু করা ছাড়াও বাগডোগরা বিমান বন্দরে আরও পরিষেবা বাড়ানোর কথা থাকবে তাঁদের ইস্তেহারে। সেখানে চা বাগান শ্রমিকদের একাধিক সমস্যার কথা তুলে ধরা হবে।

নেতারা জানান, ব্রিটিশ আমলের তৈরির চা বাগান এবং চা শ্রমিকদের দু’টি আইনের বদল প্রয়োজন। চা শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি, থাকার জায়গা ছাড়াও একাধিক সমস্যা রয়ে যাচ্ছে। অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের বাগানে জমির অধিকারও রাখা হচ্ছে ইস্তেহারে। তার সঙ্গেই রাখা হবে আদিবাসীদের জঙ্গলের অধিকার। ভানুভক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, হিল বিশ্ববিদ্যালয়, একটি পর্যটন বিশ্ববিদ্যালয়, হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে কংগ্রেস। উত্তরবঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি আলাদা করে একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বোর্ডও করার কথা ইস্তাহারে বলবে কংগ্রেস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন