সীতা-নামে হাত চাই, চাপে পড়ল সিপিএম

বাংলায় বিধানসভা ভোটে হাত ধরেও পরে ছেড়ে দিয়েছিল সিপিএম। এখন সীতারাম ইয়েচুরির স্বার্থে ফের হাত বাড়াতে হবে তাদেরই। রাজ্যসভায় ইয়েচুরিকে ফেরানোর প্রশ্নে এই মনোভাবই সিপিএমকে জানিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৭ ০০:০১
Share:

ফাইল চিত্র

বাংলায় বিধানসভা ভোটে হাত ধরেও পরে ছেড়ে দিয়েছিল সিপিএম। এখন সীতারাম ইয়েচুরির স্বার্থে ফের হাত বাড়াতে হবে তাদেরই। রাজ্যসভায় ইয়েচুরিকে ফেরানোর প্রশ্নে এই মনোভাবই সিপিএমকে জানিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ থেকে ইয়েচুরির রাজ্যসভার মেয়াদ ফুরোচ্ছে জুলাইয়ে। এখন আর বামেদের একার ক্ষমতায় কাউকে রাজ্যসভায় পাঠানো সম্ভব নয়। বিরোধীদের তরফে কংগ্রেস বরং একটি আসন পাবে। কিন্তু রাজ্যসভায় ইয়েচুরি যে ভূমিকা পালন করছেন, তার প্রেক্ষিতে তাঁকে আবার নির্বাচিত করতে চায় সিপিএমের একাংশ। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বড় অংশেরও তাতে আপত্তি নেই। এমনকী, শরদ যাদব থেকে মায়াবতী পর্যন্ত বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের নেতারাও মোদী সরকারের মোকাবিলায় ইয়েচুরিকে চান। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশ যুক্তি দিচ্ছেন, পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের অঙ্ক মাথায় রেখে এ বারের রাজ্যসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পাঁচ প্রার্থীকে জিতিয়ে বাড়তি ভোট কংগ্রেসকে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দিতে পারেন। তাতে কংগ্রেস প্যাঁচে পড়বে। তার চেয়ে সিপিএম নমনীয়তা দেখালে ইয়েচুরিকেই জিতিয়ে আনা যেতে পারে।

গুলাম নবি আজাদ, জয়রাম রমেশের মতো কংগ্রেস নেতারা ইয়েচুরিকে ফেরাতে আগ্রহী। দলের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর মনোভাব বুঝে সে কথা তাঁরা সিপিএমের নেতাদের জানিয়েও দিয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা হবে না বলে সিপিএম পলিটব্যুরোর অবস্থানই এখানে গোল পাকিয়েছে! তার জেরে বিপাকে পড়েছে সিপিএমের বঙ্গ ব্রিগেডও। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক রয়েছে ১৭ থেকে ১৯ এপ্রিল। তার পরে ২৬-২৭ এপ্রিল আলিমুদ্দিনে রাজ্য কমিটির বৈঠকে ইয়েচুরিকে আরও এক বার সুযোগ দেওয়ার দাবি উঠতে পারে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত নিতে হবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেই।

Advertisement

সিপিএমের বড় অংশই জানে, রাজ্যসভা থেকে ইয়েচুরি বিদায় নিলে জাতীয় এবং সংসদীয় রাজনীতিতে বামেরা আরও ক্ষীণকণ্ঠ হয়ে পড়বে। আবার কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতাদের বড় অংশের যুক্তি, বাংলা থেকে দলের যাঁকেই রাজ্যসভায় পাঠাতে চাওয়া হোক না কেন, তার চেয়ে ইয়েচুরির থেকে যাওয়া অনেক বেশি কার্যকরী হবে। এই প্রশ্নে স্বয়ং ইয়েচুরি প্রকাশ্যে শুধু বলছেন, ‘‘সময়মতো দল যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, নেবে।’’ যদিও দলের ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁর আশঙ্কা, সাধারণ সম্পাদক হয়েও তিনি তৃতীয় বারের জন্য সাংসদ হতে গেলে ‘সংসদীয় বিচ্যুতি’র কথা বলে সিপিএমেই কিছু লোক হইচই করবে!

পরিস্থিতির ফেরে প্রদেশ কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘‘জোট তো সিপিএম ভেঙেছে! দক্ষিণ কাঁথিতে বিধানসভা উপনির্বাচনে কোনও আলোচনা না করে প্রার্থীও দিয়েছে বামফ্রন্ট। সিপিএম আগে ঠিক করুক। নইলে আমরা তো রাজ্যসভার প্রার্থী বাছবই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement