বন্ধ কারখানা খুলছে না, নতুন বিনিয়োগও আসছে না। কিন্তু রাজ্যের কিছু শিল্পপতি প্রায় তৃণমূলের সুরে শিল্পায়নের গুণগান করছেন বলে এ বার অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় যাঁদের ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠেছে, তাঁরাই বলছেন আগে পশ্চিমবঙ্গে কিছুই হয়নি! যা হওয়ার, এখন হচ্ছে।
দলের রাজ্য দফতর বিধান ভবন, বিধানসভা এবং বজবজের রাস্তা— মঙ্গলবার দিনভর তিন জায়গাতেই শিল্পের বেহাল দশা নিয়ে সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, শিল্পোন্নয়ন নিগমের বার্ষিক রিপোর্টে কী থাকছে, কেউ জানে না। মুখ্যমন্ত্রী অন্য রাজ্যে যাচ্ছেন, বিদেশে যাচ্ছেন। কিন্তু শিল্প আসছে না, কর্মসংস্থানও হচ্ছে না। সেই প্রসঙ্গেই অধীরবাবুর মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের শিল্পপতিরা বলছেন, এমন শিল্প আগে হয়নি! কারা বলছেন? যেমন, সঞ্জীব গোয়েন্কা। এই সরকারের জমানায় ওঁদের সংস্থা ৬ বার বিদ্যুৎ মাসুল বাড়িয়েছে!’’ রাজনৈতিক নেতৃত্বের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সিইএসসি কর্তৃপক্ষ অবশ্য মুখ খুলতে চাননি।
নতুন শিল্প নেই। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই। কিন্তু রাজ্য সরকার মদ ও লটারি থেকে রাজস্ব বাড়ানোর ব্যবস্থা করে তরুণ প্রজন্মকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন প্রদেশ সভাপতি। তাঁর কটাক্ষ, বিরোধী থাকার সময়ে তৃণমূল নেত্রীই মদের দোকানের লাইসেন্স ও অনলাইন লটারির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছিলেন! দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ শিল্পাঞ্চলে এ দিন প্রায় ৬ কিলোমিটার পদযাত্রায় অধীরবাবুর সঙ্গে সামিল হয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক আখরুজ্জামান প্রমুখ।
শিল্পে মন্দা নিয়ে এ দিন বিধানসভায় আলোচনার দাবি তুলে যৌথ ভাবে মুলতবি প্রস্তাব এনেছিল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের নেপাল মাহাতোকে প্রস্তাবটি পড়ার অনুমতি দিলেও আলোচনার সুযোগ না দিয়েই প্রথমার্ধের অধিবেশন মুলতবি হয়ে যায়। প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, রাজ্যে কোনও নতুন বিনিয়োগ আসছে না। চালু কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বেকারত্ব তৈরি হচ্ছে। রাজ্যের অর্থনীতির অগ্রগতি মার খাচ্ছে। আলোচনার সুযোগ না পেয়ে বাইরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাম ও কংগ্রেস বিধায়কেরা।