প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে আবার বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারির প্রশ্নকে হাতিয়ার করে সরব হচ্ছে কংগ্রেস। তাদের নিশানায় এ বার একই সঙ্গে তৃণমূল এবং বিজেপি। ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থার হাতে প্রতারিত মানুষের টাকা ফেরত ও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে আগামী জানুয়ারি থেকেই রাস্তায় নামার পরিকল্পনা নিচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
কংগ্রেসের অভিযোগ, সারদা ও নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের কারও শাস্তি হয়নি এখনও। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের নেতাদের নাম এই কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে আছে কিন্তু কেন্দ্রীয় শাসক দল বিজেপির দায় আরও বেশি বলে তাদের মত। কারণ, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বা সংসদীয় কমিটি, কোনও স্তরেই কোনও কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টে, অভিযুক্ত নেতাদের দলে নিয়ে বিজেপির নেতারা আবার কেলেঙ্কারি নিয়ে সরব হচ্ছেন! এই প্রেক্ষিতে দুই শাসক দলকেই কাঠগড়ায় তুলে ভোটের আগে ‘সর্বস্বান্ত মানুষের জন্য ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ’ দাবি করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কথায়, ‘‘আমাদের দলের আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে মামলা হয়েছিল বলে সিবিআই সারদার তদন্ত-ভার পেয়েছিল। কিন্তু তার পরে সিবিআই তদন্তের গতি ইচ্ছেমতো শ্লথ করা হচ্ছে, কখনও বাড়ানো হচ্ছে। আমরা চাই, যথাযথ তদন্ত হোক। সর্বস্বান্ত মানুষের টাকা ফেরানো হোক।’’ অধীরবাবুর আরও মন্তব্য, ‘‘সারদার খাতা বা নারদের ভিডিয়ো খুললে দু’দলের নেতাদেরই দেখা যাবে। অথচ বিজেপি এবং তৃণমূল এখন রাজনৈতিক খেউড়ে ব্যস্ত! বাংলার মানুষকে বলব, এই খেউড়ে ভুলবেন না! মনে রাখবেন, সতর্ক খাকবেন!’’
অধীরবাবু তাঁর নাম করলেও বিরোধী দলনেতা মান্নান অবশ্য মনে করেন, আরও আগে থেকেই অর্থলগ্নি সংস্থার বিষয়ে কংগ্রেসের জোরালো আন্দোলনে নামা উচিত ছিল। সারদার মামলা করার সময়েও দল হিসেবে কংগ্রেসের কাছ থেকে তিনি সহযোগিতা পাননি, বরং বাম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য, সূর্যকান্ত মিশ্র, শ্যামল চক্রবর্তী, সুজন চক্রবর্তীরা পাশে ছিলেন। প্রতারিত মানুষদের নিয়ে মঞ্চ গড়ে আন্দোলন হয়েছিল। তবে সেই সঙ্গেই মান্নান বলছেন, ‘‘আইপিএস রাজীব কুমারের জন্য এত কাণ্ড করে তার পরে কিছুই হয়নি! বোঝাই যাচ্ছে, সিবিআইকে নিয়ন্ত্রণ করেছে বিজেপি। ভোটের আগে বিজেপি যতই দেখাতে চাক তারা কত বড় তৃণমূল-বিরোধী, এই সব ক্ষেত্রে গড়াপেটা তো জলের মতো পরিষ্কার। বিজেপি-তৃণমূলের এই খেলার বিরুদ্ধে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় থাকবে কংগ্রেস এবং বামেরা।’’