Nandigram

নন্দীগ্রামে মমতাকে হারানোর ষড়যন্ত্র, মন্ত্রী শিউলির মায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা পঞ্চায়েতে

অনাস্থা আনা হয়েছে শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ এবং কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের বিরুদ্ধেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২১ ১৭:৪৫
Share:

শিউলি সাহা এবং তাঁর মা বনশ্রী খাঁড়া। ফাইল চিত্র।

শিউলি সাহাকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে মমতাকে হারাতে শিউলির মা বনশ্রী খাঁড়া সক্রিয় ছিলেন বলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বুধবার নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বনশ্রীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যেরা নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের বিডিও-র দফতরে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন।

Advertisement

বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর হয়ে কাজ করার অভিযোগে অনাস্থা আনা হয়েছে ওই ব্লকেরই মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ গোকুলনগরের বাসিন্দা স্বদেশ দাস অধিকারী এবং কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সানোয়ার শাহের বিরুদ্ধেও।

বনশ্রী এ বিষয়ে বলেন, ‘‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে বুধবার সকাল ১১টায় বিডিও-র দফতরে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে এসেছি।’’ অন্য দিকে, দুপুর দেড়টা নাগাদ ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১ জন তৃণমূল সদস্য স্থানীয় বিডিও অফিসে বনশ্রীর বিরুদ্ধে লিখিত ভাবে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করে পঞ্চায়েতের বৈঠক ডাকার আবেদন জানিয়েছেন। ওই পঞ্চায়েতের মোট সদস্য ১৩ জন। বনশ্রীর পাশাপাশি তাঁর ছেলে সুদীপও ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্বাচিত সদস্য। তিনি আগে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। নন্দীগ্রামের মেয়ে শিউলি ও তাঁর পরিবার জমি আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন। বনশ্রী নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সভাপতিও হয়েছিলেন। গত পঞ্চায়েত ভোটে জিতে তিনি নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের পদ পান।

Advertisement

নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি স্বদেশ দাস বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে দল বিরোধী কাজ করেছেন বনশ্রী খাঁড়া। দলনেত্রীর বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগের নানা তথ্য মিলেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সব দিক খতিয়ে দেখার পরেই স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যরা বনশ্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন।’’ তিনি জানান, এর পর সরকারি নিয়ম মেনে বিডিও অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে সদস্যদের সভা ডাকার নোটিস জারি করবেন। সেখানেই ভোটাভুটির মাধ্যমে ওই ৩ জনকে পদ থেকে অপসারিত করা হবে। পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষকে সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট স্থায়ী সমিতির বৈঠক ডাকতে হবে।

২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা ছিলেন স্বদেশ দাস অধিকারী। তৃণমূলের অন্দরেও ‘শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। এ বারের নির্বাচনে গোকুলনগর এলাকায় মমতার চেয়ে কয়েক হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন শুভেন্দু। ওই ফলের পিছনে স্বদেশের ‘ভুমিকা’ ছিল বলেই মনে করছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। অন্য দিকে কেন্দেমারির উপপ্রধান সানোয়ার শাহ বরাবরই আবু সুফিয়ানের বিরোধী হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনে শুভেন্দুকে সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও ওই অঞ্চলে ভোটের হিসেবে শুভেন্দুর তুলনায় অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন মমতা।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র তাপস মাইতি বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় যাঁরা তৃণমূলের সুবাদে ক্ষমতায় থেকে দল বিরোধী কাজ করেছেন, তাঁদের খুঁজে বার করা হচ্ছে। জেলা নেতৃত্ব পর্যালোচনা করে তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে। পঞ্চায়েতের পদ থেকে অপসারণের পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক স্তরেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন