‘লোভ সংবরণ করুন, মনে রাখবেন, সরকারি অর্থ আসলে জনগণের অর্থ’, বললেন মমতা

লোকসভা ভোটে ধাক্কার পর্যালোচনা করতে গিয়ে বারবারই মমতা তৃণমূলের একাংশের টাকা খাওয়ার প্রবণতা টের পেয়েছেন।

Advertisement

রবিশঙ্কর দত্ত

দিঘা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০২:২২
Share:

দিঘায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

লোভ সংবরণ করুন— নিজের দল ও প্রশাসনকে এই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

মঙ্গলবার দিঘায় আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারের উদ্বোধন করে মমতা বলেন, ‘‘আমাদের সবাইকে নিজেদের লোভ সংযত করতে হবে। এটা কোনও দলের জন্য বলছি না। কোনও অফিসারকে বলছি না। মনে রাখবেন, সরকারি অর্থ আসলে জনগণের অর্থ।’’

লোকসভা ভোটে ধাক্কার পর্যালোচনা করতে গিয়ে বারবারই মমতা তৃণমূলের একাংশের টাকা খাওয়ার প্রবণতা টের পেয়েছেন। যার জন্য তাঁকে কাটমানি ফেরতের মতো নির্দেশ দিতে হয়েছে। আর সেই জল গড়িয়েছে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ পর্যন্ত। এ দিন আরও একবার ‘লোভ সংবরণের’ বার্তা দিয়ে দলের শুদ্ধকরণের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী সামনে আনলেন বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেরই অভিমত। তাঁর আরও পরামর্শ, ‘‘আমাদের দেখতে হবে যেন নিজের এলাকাটা সুন্দর রাখতে পারি। মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিতে পারি।’’

Advertisement

তিনি মানুষের কাছে উন্নয়ন পৌঁছে দিয়ে আর্থ সামাজিক অবস্থার বদল আনতে চেষ্টা করছেন বলে এ দিনও মন্তব্য করেছেন মমতা। নতুন এই কনভেনশন সেন্টারের মাধ্যমে তিনি যে দিঘার পর্যটনকে আধুনিক শিল্পবাণিজ্যের মানচিত্রে যোগ করতে চান, তা-ও ব্যাখ্যা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আগে কেউ নজর দেয়নি। যখন এসেছি, দেখেছি, এক হাঁটু জল।’’ সেই সূত্রেই কর্মসংস্কৃতিতে স্বচ্ছতা ও আন্তরিকতা যোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন। যে কারণে প্রকল্প শুরুর বদলে তা রূপায়ণের উপরেই জোর দিয়েছেন তিনি। এর জন্য জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি সরকারি আধিকারিকদের দায়বদ্ধতাও সুনিশ্চিত করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন দিঘা-তমলুকের মধ্যে ট্রেন চালুর ব্যাপারে তাঁর উদ্যোগের প্রসঙ্গও তোলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘অনেকে আমাকে বলেছিলেন, এই কাজ করতে ৯ বছর লেগে যাবে। আমি জানতে চেয়েছিলাম, কেন? আমরা সেই কাজ করেছিলাম ১৫ মাসে।’’

রাজ্যের উন্নয়নে কেন্দ্র যে ‘প্রতিবন্ধকতা’ তৈরি করছে, সেই অভিযোগও এ দিন সামনে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকার কথা মতো কাজ না করায় তাজপুরে প্রস্তাবিত বন্দর রাজ্য সরকার তৈরি করবে। বহু প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ বলেও এ দিন ফের অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

একই সঙ্গে পাহাড়ের উন্নয়ন যে অনেকটাই ‘ব্যাহত’, সেই প্রসঙ্গও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রকারান্তরে বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বলেন, ‘‘দার্জিলিঙের অনেকটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমি অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু কিছুদিন পরপর যদি জ্বালিয়ে দাও, গুঁড়িয়ে দাও বলা হয়, তা হলে কিছু করা যায় না!’’ বিজেপির নাম না করেও স্থানীয় ভাবে তাদের মোকাবিলায় দল ও প্রশাসনকে কঠোর হতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। দিঘার পরিবেশ ও সৌন্দর্য রক্ষায় রাজনৈতিক দলের ‘ব্ল্যাকমেলিং’ এর সামনে জেলা প্রশাসনকে নরম না হওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন