এখনই বিতর্কিত বেবি শ্যাম্পু বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না বঙ্গে

এনসিপিসিআর ২৭ এপ্রিল বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবদের চিঠি দিয়ে ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’-এর বেবি শ্যাম্পু বিক্রি বন্ধ করতে এবং দোকান থেকে তা সরিয়ে ফেলতে বলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ০২:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

ক্ষতিকর রাসায়নিক আছে বলে অভিযোগ তুলে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার বেবি শ্যাম্পু বিক্রি বন্ধে পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গকেও চিঠি লিখেছে জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন (এনসিপিসিআর)। সেই চিঠি পেলেও কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এখনই ব্যবস্থা নিতে রাজি নয় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

এনসিপিসিআর ২৭ এপ্রিল বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবদের চিঠি দিয়ে ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’-এর বেবি শ্যাম্পু বিক্রি বন্ধ করতে এবং দোকান থেকে তা সরিয়ে ফেলতে বলে। রাজস্থানের ড্রাগ কন্ট্রোলের রিপোর্টের ভিত্তিতে ওই চিঠি দেওয়া হয়। বিতর্কের সূচনা জনসনের বেবি পাউডার নিয়ে। সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরে আন্তর্জাতিক সংস্থার বেবি পাউডার কতটা নিরাপদ, সেই প্রশ্ন ওঠে। রিপোর্টে জানানো হয়, জনসন বেবি পাউডারে অ্যাসবেস্টস আছে। অ্যাসবেস্টস এক ধরনের খনিজ পদার্থ, যা শরীরে ঢুকলে ক্যানসার হতে পারে। ওই রিপোর্টের বক্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ে যায়। এনসিপিসিআর রাজ্যকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছে, ওই অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত হতে শিশু অধিকার সুরক্ষার ১৭ নম্বর ধারায় ব্যবস্থা নিয়েছিল কমিশন। এই পরিপ্রেক্ষিতে অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং অসম সরকারকে জনসনের বেবি পাউডার ও বেবি শ্যাম্পুর নমুনা রাজ্য সরকারের স্বীকৃত গবেষণাগারে পরীক্ষা করতে বলা হয়।

এনসিপিসিআর সূত্রের খবর, এ-পর্যন্ত শুধু রাজস্থানের ড্রাগ কন্ট্রোলই রিপোর্ট পাঠিয়েছে। জয়পুরের সরকার স্বীকৃত পরীক্ষাগারের রিপোর্টে জানানো হয়, বেবি শ্যাম্পুতে ক্ষতিকারক ফরম্যালডিহাইড মিলেছে। ফরম্যালডিহাইড হল বর্ণহীন এক ঝাঁঝালো গ্যাস। ক্যানসার চিকিৎসক সোমনাথ সরকার বলেন, ‘‘সরাসরি ফরম্যালডিহাইডের সংস্পর্শে এলে ত্বক, চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পেটে গেলে নানা ধরনের রোগ, এমনকি হতে পারে পেটের ক্যানসারও।’’ রাজস্থানের পরীক্ষাগারের রিপোর্টে সেই উপাদান থাকায় রাজ্যগুলিকে চিঠি দেয় জাতীয় শিশু কমিশন।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রাজস্থানের রিপোর্ট নস্যাৎ করে জনসন অ্যান্ড জনসন ইতিমধ্যে জানিয়েছে, তাদের শ্যাম্পুতে উপাদান হিসেবে ফরম্যালডিহাইড ব্যবহার করা হয় না। এবং এমন কোনও উপাদানও ব্যবহার হয় না, যা থেকে ফরম্যালডিহাইড নির্গত হতে পারে। তাদের সমস্ত সামগ্রীই সব দিক থেকে নিরাপদ বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। বেবি পাউডারে অ্যাসবেস্টস সংক্রান্ত রিপোর্টও সম্পূর্ণ ভুয়ো ও একপেশে বলে জানিয়েছিল তারা।

চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্যে ওই সংস্থার শ্যাম্পু বিক্রি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার নির্দেশ প্রয়োজন। তাদের কাছ থেকে এই ধরনের কোনও নির্দেশ পাইনি।’’

জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো বলেন, ‘‘আমাদের সুপারিশের ভিত্তিতে রাজ্য কী ব্যবস্থা নিয়েছে, চিঠিতে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সুপারিশ কার্যকর না-হলে আইন মেনে ফের চিঠি দেওয়া হবে।’’

সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন বা সিডিএসসিও-র এক আধিকারিক জানান, আন্তর্জাতিক সংস্থাটি রাজস্থান ড্রাগ কন্ট্রোলের রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়ার অধিকারী চেন্নাইয়ের পরীক্ষাগার। সেখানে বেবি শ্যাম্পুর নমুনা পাঠানো হয়েছে। সারা দেশ থেকে ওই সংস্থার বেবি শ্যাম্পুর নমুনা সংগ্রহ করেছে সিডিএসসিও। তার রিপোর্ট আসার আগে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সামগ্রী বিক্রি বন্ধের মতো পদক্ষেপ করা হলে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে জানান ওই আধিকারিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন