TMC

‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর মোদী সরকারের সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল থেকে তৃণমূল ফিরিয়ে নিল ইউসুফের নাম, কী কারণে

শিবসেনা (উদ্ধব) এবং তৃণমূল সরাসরিই বলেছে, সব দলকে সঙ্গে নিয়ে দৌত্যের মোড়কে আসলে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সিদ্ধ করছে শাসক দল বিজেপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৫ ০৭:৫৫
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ইউসুফ পাঠান। —ফাইল চিত্র।

‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর মোদী সরকারের সর্বদলীয় কূটনৈতিক দৌত্যের বিষয়টি নিয়ে ঘরোয়া রাজনীতির পারদ আরও চড়ল রবিবার। তৃণমূল, শিবসেনা (উদ্ধবপন্থী) এবং কংগ্রেস প্রকাশ্যেই সমালোচনায় বিদ্ধ করছে কেন্দ্রের এই উদ্যোগকে। অভিযোগ, আমেরিকার চাপে মাঝপথে সংঘর্ষবিরতি হয়ে যাওয়া এবং এখনও পর্যন্ত পহেলগাম কাণ্ডে অপরাধীদের ধরতে না পারার কারণে যে খেদ তৈরি হয়েছে দেশবাসীর মনে, তার থেকে নজর ঘোরাতেই সবাইকে সঙ্গে নেওয়ার আয়োজন। পাশাপাশি শিবসেনা (উদ্ধব) এবং তৃণমূল সরাসরিই আজ বলছে, সব দলকে সঙ্গে নিয়ে দৌত্যের মোড়কে আসলে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সিদ্ধ করছে শাসক দল বিজেপি।

গত কাল প্রতিনিধিদলের যে তালিকা প্রকাশ করেছিল কেন্দ্র, সেখান থেকে তাদের প্রতিনিধির নাম ফিরিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ ইউসুফ পাঠানের সঙ্গে গত কাল বিদেশ মন্ত্রক এবং সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে পাসপোর্ট সংক্রান্ত নথি চেয়ে নেওয়া হয়। সফরসূচিও ঝালিয়ে নেন ওই প্রাক্তন ক্রিকেটার। কিন্তু আজ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানান, এই প্রতিনিধিদলে তাঁদের পক্ষ থেকে কেউ যাবেন না। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ ভাবে দেশ এবং জাতীয় স্বার্থের পক্ষে। কিন্তু আন্তর্জাতিক কূটনীতি করাটা কেন্দ্রের কাজ। সেটা তারাই করুক।” দলীয় সূত্রের বক্তব্য, তৃণমূল দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলে। কোন প্রতিনিধিদলে কে যাবেন, সেটা বিজেপি বা সরকার স্থির করতে পারে না। দলনেতা বা নেত্রীর সঙ্গে কথা না বলে বা আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠি না দিয়ে সেই দলেরই সাংসদকে ফোন করে পাসপোর্ট চেয়ে নেওয়া শৃঙ্খলার পরিপন্থী।

উদ্ধবপন্থী শিবসেনা মুখ খুলেছে। উদ্ধব ঠাকরের কাছে অনুমতি না নিয়েই প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীকে প্রতিনিধিদলে রাখায় ক্ষোভ রয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। আজ দলের নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, “বরযাত্রী (বারাত) পাঠানোর দরকারই নেই। প্রধানমন্ত্রী দুর্বল। এখন তাড়াহুড়ো করার দরকারই ছিল না। মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দের পুত্র শ্রীকান্ত গিয়ে বিদেশে কিসের প্রতিনিধিত্ব করবেন? বিজেপির সব কিছু নিয়ে রাজনীতি করা অভ্যাস। ইন্ডিয়া মঞ্চের উচিত, এই বারাত বয়কট করা।” তবে প্রিয়ঙ্কা প্রতিনিধিদলে থাকবেন কি না, তা নিয়ে মুখ খোলেননি সঞ্জয়। গত কাল মুম্বইয়ে সঞ্জয়েরই লেখা একটি বইয়ের উদ্বোধনের মঞ্চে ছিলেন উদ্ধব, শরদ পওয়ার, জাভেদ আখতার, সাকেত গোখলে। প্রিয়ঙ্কা থাকলেও তাঁকে মঞ্চে ডাকা হয়নি। সূত্রের খবর, তাঁর সরকারের ওই প্রতিনিধিদলে থাকার অতি-আগ্রহ রুষ্ট করেছে উদ্ধবকে।

রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গেকে টপকে মোদীর কার্যালয় বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়ে শশী তারুরকে প্রতিনিধিদলের নেতা হিসাবে বেছে নিয়েছে। তারুর সম্প্রতি একের পর এক দলস্বার্থ-বিরোধী মন্তব্যের জন্য ভৎর্সিত হয়েছেন দলে। রাহুলকে বাদ দিয়ে শশীকে নেওয়ার পিছনে নির্দিষ্ট রাজনীতি কাজ করছে বিজেপির, এমনটাই মনে করছে কংগ্রেস। বিতর্ককে উস্কে আজ বিজেপি নেতা গৌরব বল্লভ বলেছেন, “আসল প্রতিভাকে কংগ্রেস চাপা দেয়। কংগ্রেস জবাব দিক, কেন তারুরকে এত ঘৃণা? যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর যোগ্যতার কারণে তারুরকে বাছছেন, তখন কংগ্রেসের কী সমস্যা?”

কংগ্রেসও পাল্টা খোঁচা দিয়েছে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের জন্মদিনকে কেন্দ্র করে। আজ তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেছেন, “আন্দোলনরত কৃষকদের হয়ে জগদীপ ধনখড়ের আবেগার্ত আবেদনকে মোদী সরকার যে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে চলেছে, তা দুর্ভাগ্যজনক ঠিকই। কিন্তু এতে বিস্ময়ের কিছু নেই।” ডিসেম্বরে ধনখড় কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে বলেন, অবিলম্বে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে। আজ সেটাই তুলেই খোঁচা দিল কংগ্রেস।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন