প্রতীকী ছবি।
প্রাথমিকে পাশ-ফেল ফেরানোর উদ্যোগে সায় মিলেছে শিক্ষাবিদ, রাজনীতিকদের অধিকাংশেরই। কিন্তু বাম শিক্ষক সংগঠন পাশ-ফেল প্রথা ফেরানোর বিরোধিতা করায় বিস্ময় ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এসইউসি-র বক্তব্য, পাশ-ফেলের প্রত্যাবর্তন রুখতে বাম শিক্ষক সংগঠন স্কুলছুট তত্ত্ব এবং আরএসএস-ভীতির কথা বলছে। কিন্তু সেটা অজুহাত। এই নিয়ে বাম-এসইউসি তরজা চলছে।
পাশ-ফেল নিয়ে গত শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বৈঠকে বাম শিক্ষক-নেতারা জানান, পাশ-ফেল ফিরলে স্কুলছুট বাড়বে। আর তাদের ভর্তি নিতে ঝাঁপিয়ে পড়বে আরএসএস পরিচালিত, সরকারি অনুমোদনহীন স্কুল। নৈতিকতা ও পাঠ্যপুস্তকের শিক্ষার বদলে সেখানে দেওয়া হবে ধর্ম ও অস্ত্রশিক্ষা।
এই বাম আশঙ্কার বিরুদ্ধেই সরব হয়েছে এসইউসি। ওই দলের রাজ্য সম্পাদক সৌমেন বসু প্রেস বিবৃতিতে জানান, স্কুলছুটের অজুহাতেই বাম আমলে প্রাথমিকে ইংরেজি তুলে দেওয়া হয়েছিল। এখন ফের সেই যুক্তি দেখানো হচ্ছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরএসএস-জুজু। এটা রাজ্যবাসীর সঙ্গে প্রতারণার সামিল। ‘‘প্রাথমিকে পাশ-ফেল প্রথা চালু করলে যদি স্কুলছুট বাড়ে, তা হলে তো সেটা উঁচু ক্লাসেও হতে পারে। সেখানেও কি পাশ-ফেল তুলে দেওয়া উচিত,’’ প্রশ্ন শিক্ষক-নেতা গৌতম মাইতির।
জবাবে নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘প্রাথমিকের থেকে নবম শ্রেণির পড়ুয়ারা যথেষ্ট পরিণত। তাদের পক্ষে আরএসএসের হাতছানি প্রতিহত করা সম্ভব।’’
শুক্রবারের বৈঠকে ডাক পায়নি সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। তাদের সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, ‘‘এমন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের ব্রাত্য করে রাখাটা অপমানের সামিল।’’ তিনি জানান, প্রাক্-প্রাথমিক, প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণিকে পাশ-ফেল প্রথার আওতায় আনা শিক্ষাবিজ্ঞানের দিক থেকে অনুচিত বলে মনে করে তাঁদের সমিতি। এর ফলে স্কুলজীবনের শুরুতেই ফেল করার আতঙ্ক স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। সৌগতবাবু জানান, কাল, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে এই বিষয়ে প্রতিবাদপত্র পাঠানো হবে।