মাস ছয়েক আগে বিয়ের পর থেকে অধিকাংশ সময় দার্জিলিঙে স্বামীর সঙ্গেই থাকতেন। রাতের টহলদারিতে মাঝেমধ্যেই যেতে হতো অমিতাভকে। আর উৎকণ্ঠায় কাঁটা হয়ে রাত কাটত মনার। বৃহস্পতিবার তেমনই একটা রাত ছিল। আর শুক্রবার সকালে যেন সেই আশঙ্কাটাই ফলে গেল। কফিনবন্দি হয়ে ঘরে ফিরলেন ২৬ বছরের তরুণ সাব ইনস্পেক্টর অমিতাভ মালিক। কফিনের ওপরে অঝোর কান্নায় ভেঙে পড়লেন মনা।
আরও পড়ুন: প্রণবই বেশি ভাল প্রধানমন্ত্রী হতেন, বললেন মনমোহন
দার্জিলিং থানার সামনে রাখা অমিতাভের দেহ থেকে কিছুতেই তুলে আনা যাচ্ছিল না মনাকে। অন্য পুলিশ কর্মী ও তাঁদের পরিবারের চোখেও জল। ছিলেন জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্তও। কিন্তু কেউই মনাকে সামলাতে পারছিলেন না। সাদা কাপড়ে মোড়া স্বামীর দেহ জড়িয়ে ধরে মনা তখন বলছিলেন, ‘‘সবাই ফিরে এল, তুমি কেন এলে না!’’ থানারই এক ইনস্পেক্টর বলছিলেন, ‘‘কালীপুজোয় বাড়ি যাবে বলছিল। স্পেশাল অপারেশন একটু থামলে যেতে বলেছিলাম।’’
শোকস্তব্ধ: স্বামী অমিতাভ মালিকের দেহ আঁকড়ে মনা। শুক্রবার দার্জিলিঙে। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার ভোরে দার্জিলিং থেকে আসা ফোনেই ঘুম ভাঙে মধ্যমগ্রামের পাটুলির মালিক পরিবারের। ছেলে গুলিতে জখম হয়েছে, এই খবর পেয়েই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে টিভির সামনে বসে গিয়েছিলেন, বাবা সৌমেন মালিক। কিছু ক্ষণের মধ্যেই জেনে যান ছেলে আর নেই। ডিআইজি, পুলিশ সুপার সবাই তখন হাজির সৌমেনবাবুদের বাড়িতে। এসপি-র ফোনেই মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন অমিতাভর বাবার সঙ্গে।
আজ, শনিবার দুপুরে অমিতাভর দেহ আনা হবে তাঁর মধ্যমগ্রামের বাড়িতে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ছাড়া, আরও ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। পুলিশে চাকরি দেওয়া হবে মনাকে। সৌমেনবাবুকেও চাকরি দেওয়া হবে শিক্ষা দফতরে।