প্রতীকী ছবি
এ বার হটস্পটের খোঁজ শুরু হল শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায়।
কলকাতা থেকে সিআইডি-র এডিজি এবং রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের নির্দিষ্ট বার্তা পেয়ে ২ এপ্রিল শিলিগুড়ি পুলিশ দিল্লিতে যাওয়া করোনা সন্দেহভাজনদের একটি তালিকা স্বাস্থ্য দফতরের হাতে তুলে দিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের তৈরি ওই রিপোর্টে ৩৬ জনের নাম, ঠিকানা এবং যাবতীয় তথ্য দেওয়া হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৪ মার্চ থেকে ২১ মার্চ অবধি এঁরা সকলে দিল্লির হটস্পট বা আশপাশের এলাকা ছিলেন, এমন তথ্য পুলিশের কাছে রয়েছে। এঁরা করোনাভাইরাসের বাহকও হতে পারেন, তাই স্বাস্থ্য দফতরের উচিত প্রত্যেককে চিহ্নিত করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজনে আইসোলেশন বা কোয়রান্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। পুলিশের তরফে সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, নিজামুদ্দিনে তবলিগি সমাবেশে যোগ দেওয়া বিদেশি থেকে দেশের নাগরিকদের অনেকেই ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গোটা দেশের প্রতিটি রাজ্যে দিল্লি ফেরত ওই বাসিন্দাদের খোঁজ চলছে। অনেককেই চিহ্নিত করে হোম কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। কমিশনারেটের এক ডিসি জানান, শিলিগুড়ি পুলিশ যে ৩৬ জনের তালিকা তৈরি করেছে, তাঁদের অধিকাংশই সংখ্যালঘু নন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, মার্চ মাসের ওই ক’দিন সকলেই দিল্লির হটস্পট বা লাগোয়া এলাকা ছিলেন। এর পিছনে ব্যবসায়িক বা ব্যক্তিগত কারণ থাকতে পারে। এখন এঁরা যে বাহক নন, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই তাঁরা কোথায় আছেন, তাঁদের শরীরের অবস্থা কেমন— এটাই এখন খোঁজ করে দেখা শুরু হয়েছে।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলার অংশ নিয়ে গঠিত। তাই পুলিশে তরফে দুই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং জেলাশাসকদের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে কোনও সরকারি আমলা বা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক মুখ খুলতে নারাজ। এক আধিকারিক শুধু বলেছেন, ‘‘গত ৪ এপ্রিল পুলিশের পাঠানো তালিকা, রিপোর্ট হাতে এসেছে। প্রতিটি থানা এলাকায় খোঁজ করা চলছে। তবে আক্রান্তের হদিশ এখনও মেলেনি।’’
গত ৩১ মার্চ রাজ্য গোয়েন্দা দফতর থেকে একটি বার্তা (নং-১৯৪৯-৫১) শিলিগুড়ি আসে। পরের দিন আবার একই বার্তা আলাদা করে পাঠান রাজ্য সিআই়ডি-র এডিজি-ও (০৫-এডিজি-সিআইডি)। দু’টি বার্তায় যা বলা হয়েছে তার নির্যাস, অন্ধ্রপ্রদেশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের তরফে রাজ্যের কাছে একটি তালিকা (ইনপুট নং-৩৭৬৮৮৭) পাঠামো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ৮৩৭ জন ওই সময়ে দিল্লির হটস্পট বা আশপাশের এলাকায় ছিলেন। এঁদের সকলের ডিজিট্যাল ফুটপ্রিন্টের প্রমাণ রয়েছে। বিমান টিকিট, সিসিটিভি ফুটেজ, হোটেলের রেজিস্ট্রার-সহ নানা তথ্য পর্যালোচনা করে ওই ফুটপ্রিন্ট তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬ জনের নাম পাওয়া গিয়েছে, যারা শিলিগুড়ির বাসিন্দা। ৬৪০ বর্গ কিলোমিটারের কমিশনারেটের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। তালিকাভুক্তদের মধ্যে ১৪ জন শিলিগুড়ি থানা এলাকার, ৪ জন এনজেপি, ৫ জন প্রধাননগর, ৯ জন ভক্তিনগর, ৩ জন মাটিগাড়া এবং ১ জন বাগডোগরা থানা এলাকার বাসিন্দা।