Coronavirus

অবাধ মেলামেশা তেহট্টের করোনা আক্রান্তের পরিবারের

যেখানে বিদেশ থেকে ফিরলেই সরকারি তরফে ‘সেল্ফ আইসোলেশন’ এর কথা বলা হচ্ছে, সেখানে ওই তরুণ বা পরিবারের সদস্যেরা কেন সতর্ক হলেন না? 

Advertisement

সুস্মিত হালদার , সাগর হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২০ ০৫:২১
Share:

প্রতীকী ছবি

অখ্যাত বার্নিয়া রাতারাতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তেহট্ট মহকুমার এই গ্রামেরই কৃষ্ণপুর অঞ্চলে শুক্রবার একই পরিবারের পাঁচ জনের দেহে করোনাভাইরাসের প্রমাণ মিলেছে।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর, নদিয়া প্রশাসন ও ওই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ মার্চ রাত ১২টা নাগাদ লন্ডন থেকে পরিবারের এক তরুণ দিল্লি ফেরেন। দিল্লির বাড়িতে তাঁর মা-বাবা ছিলেন। পর দিনই ভোর ৫টা ৫ মিনিটের প্লেন ধরেন তাঁরা। সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ নামেন কলকাতায় নেতাজি সুভাষ বিমানবন্দরে। তার পর নিজেদের গাড়িতে চলে যান নদিয়ার পলাশিপাড়া থানার বার্নিয়ায়। সেখানে ওই তরুণের দাদুর বাৎসরিক কাজ হওয়ার কথা ছিল ২৭ মার্চ। ওই বাড়িতেই তরুণের দিদিমাও ছিলেন। বগুলা থেকে এসেছিলেন তাঁর বোন। ১৫ মার্চ দিল্লি থেকে এসেছিলেন তরুণের ঠাকুরদা। বাড়িতে কাজ করতেন এক পরিচারিকা। তরুণের বাবা বাজার করার পাশাপাশি চায়ের দোকানে গিয়ে গল্পও করেছেন।

এরই মধ্যে শরীর খারাপ হওয়ায় ওই তরুণ দু’বার গুড়গাঁওয়ের এক হাসপাতালে লালারসের পরীক্ষা করান। তাঁর বাবা শনিবার টেলিফোনে দাবি করেন, নমুনা সংগ্রহ করলেও আলাদা থাকতে বলেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যেখানে বিদেশ থেকে ফিরলেই সরকারি তরফে ‘সেল্ফ আইসোলেশন’ এর কথা বলা হচ্ছে, সেখানে ওই তরুণ বা পরিবারের সদস্যেরা কেন সতর্ক হলেন না?

Advertisement

গত ১৮ মার্চ উত্তরাখণ্ড থেকে তরুণের ছোট মাসি দুই মেয়েকে নিয়ে তরুণের দিল্লির ফ্ল্যাটে চলে আসেন। দিল্লির লালকুঁয়া থেকে ওই ফ্ল্যাটেই আসেন তরুণের সেজমাসি ও তাঁর ১১ বছরের ছেলে এবং গুড়গাঁও থেকে আসেন বড় মাসি ও তাঁর ১১ বছরের ছেলে। ১৯ মার্চ তাঁরা দিল্লি থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে ওঠেন। ২০ মার্চ শিয়ালদহে নেমে লালগোলা প্যাসেঞ্জারে জেনারেল কামরায় ওঠেন এবং দুপুরে বেথুয়াডহরি পৌঁছন। সেখান থেকে অটোয় যান কৃষ্ণপুরে।

পাশাপাশি উত্তরাখণ্ড থেকে সোজা বার্নিয়ায় চলে আসেন তরুণের এক মেসোমশাই। ২০ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত তাঁরা বাজার ও প্রতিবেশীদের বাড়িও যান বলে জানিয়েছেন নদিয়ার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত দেওয়ান। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁদের কাছ থেকে ওই পরিবার আনাজ-মাছ কিনেছিল, তাঁদের চিহ্নিত করা চেষ্টা করছি। তাঁদের প্রতিবেশী, পাড়ার তিন জন ও পরিচারিকা কোয়রান্টিনে।”

দিল্লিতে ২২ মার্চ তরুণের পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তখন তাঁর বাবা স্ত্রী, শাশুড়ি, শাশুড়ির বোন, তিন শ্যালিকা ও বাবাকে গাড়িতে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে পাঠান। তাঁর দাবি, ‘‘হাসপাতাল থেকে পর দিনই সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয় তেমন উপসর্গ পাওয়া যায়নি বলে। তাঁরা বার্নিয়ার বাড়িতে ফিরে আসেন।” ২৪ মার্চ আশাকর্মীরা গিয়ে দেখেন, তিন জনের জ্বর এসেছে। তার পরই আইসোলেশন এবং পরীক্ষানিরীক্ষা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন