Coronavirus

পরিকাঠামো নিয়ে বৈঠক মমতার

তিনি জানান, পিপিই পোশাক, ২ লক্ষ মাস্ক, ১০ হাজার থার্মাল গান, পর্যাপ্ত স্যানিটাইজ়ারের বরাত দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০ ০৬:০৪
Share:

বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।

এক দিকে গুজব ও আতঙ্ক মোকাবিলা, অন্য দিকে পরিকাঠামো বৃদ্ধি। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের কাছে এই দুই চ্যালেঞ্জই সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার নবান্নে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সরকারি হাসপাতালের কর্তাদের মুখে পরিকাঠামোর প্রশ্নটি বার বার উঠে এসেছে। কেন্দ্র যে যথেষ্ট সাহায্য করছে না, তা স্পষ্ট জানান মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

তবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের সঙ্কটে একসঙ্গে লড়ছি। এখন জাতীয় স্বার্থ-বিরোধী কিছু বলব না। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স আছে। উপযুক্ত জায়গায় সুযোগ পেলে যা বলার বলব।’’

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, করোনা সংক্রমণ পরীক্ষার জন্য দেশে ৭৪টি কেন্দ্র রয়েছে। এ রাজ্যে রয়েছে মাত্র দু’টি। শিলিগুড়ি, জঙ্গলমহল, ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং বর্ধমানে পরীক্ষা কেন্দ্রের অনুমতি চাওয়া হলেও কেন্দ্র তা মঞ্জুর করছে না। পাশাপাশি, পরীক্ষার পর্যাপ্ত কিটও পাওয়া যাচ্ছে না বলে মুখ্যমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করেন।

Advertisement

তিনি জানান, পিপিই পোশাক, ২ লক্ষ মাস্ক, ১০ হাজার থার্মাল গান, পর্যাপ্ত স্যানিটাইজ়ারের বরাত দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ৩০০ ভেন্টিলেটর মেশিন, ফুসফুস পরিষ্কার করার ১০টি ইসিএমও মেশিন কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও ১০ হাজার থার্মাল গান কেনা হবে।

এনআরএস-এর প্রিন্সিপাল শৈবাল মুখোপাধ্যায় বৈঠকে জানান, কয়েক হাজার মাস্ক পেয়েছিলেন, কিন্তু কয়েক দিনেই তা উধাও হয়ে গিয়েছে। যাঁদের প্রয়োজন নেই তাঁরাও মাস্ক নিয়ে চলে যাচ্ছেন। তিনি এ নিয়ে কিছুটা নিয়ন্ত্রণের কথা তুলতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওঁরা অনেক কাজ করছেন। সামান্য মাস্ক চাইলে দিয়ে দেবেন।’’ স্বাস্থ্য দফতর যাতে মাস্ক পাঠায় সে জন্য মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ ও স্বাস্থ্যসচিব বিবেক কুমারকে নির্দেশ দেন তিনি। অন্য সরকারি হাসপাতালগুলি থেকেও একই দাবি ওঠে। বেসরকারি হাসপাতালগুলির তরফেও গ্লাভ্স, সার্জিক্যাল মাস্কের অভাবের কথা বলা হয়।

নানা সমস্যার মাঝেও বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিনন্দন জানান মমতা। সুপার অনিমা হালদারকে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা খুবই ভাল কাজ করছেন। জানি, চাপ হচ্ছে। তবুও ভাল করছেন।’’ সুপার মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, তাঁর হাসপাতালে পর্যাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার নেই। বৃহস্পতিবার এক জন মেডিক্যাল অফিসার দু’জন ইন্টার্নকে নিয়ে ৫০০ রোগী দেখছেন।

বস্তুত, এ দিন আইডিতে করোনা সন্দেহভাজনদের দীর্ঘ লাইন পড়ে। তাঁদের পরীক্ষা করতে অনেক সময় লেগে যায়। ফলে একাধিক বার উত্তেজিত হয়ে পড়েন দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়ানো লোকজন। পাশাপাশি, বিদেশ থেকে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা অন্যদের সঙ্গে এক লাইনে দাঁড়ানোয় প্রমাদ গোনেন নাইসেডের আধিকারিকেরা। কারণ, করোনা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে দূরত্ব বজায় রাখাটাই গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা আইডি-র কর্তাদের এ ব্যাপারে সতর্ক করেন। ঘটনা শুনে আইডিতে আরও মেডিক্যাল অফিসার দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।

মাস্ক, গ্লাভ্স, পিপিই পোশাক, পরীক্ষার সরঞ্জাম ইত্যাদিরও অভাব রয়েছে আইডিতে। মুখ্যমন্ত্রী তৎক্ষণাৎ স্বাস্থ্যসচিবকে প্রয়োজনীয় সব জিনিস দিতে বলেন। এসএসকেএম, আরজি কর হাসপাতালও পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যার কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে তা মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দেন তিনি।

গুজব এবং আতঙ্কের যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা ঠেকাতেও মুখ্যমন্ত্রী এ দিন রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন জানান। তিনি বলেন, ‘‘করোনা আর পাঁচটা রোগের মতোই। কোনও রোগীকে অস্পৃশ্য ভাববেন না। নিজে সতর্ক থাকুন। প্রতিরোধী ব্যবস্থা নিন।’’ ভুয়ো খবর, গুজব ছড়ালে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন