চাল-আলু বিক্রি করতে গিয়ে জমায়েত রামপুরহাট বালিকা বিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র
স্কুলের পোশাক, হাতে থলে। জেলার প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, এসএসকে, এমএসকে-সহ জেলার প্রায় ৩০০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সোমবার এ ভাবেই ভিড় জমাতে দেখা গেল প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের। এই ভিড় দেখেই করোনা-সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ দিন স্কুল থেকে চালু আলু নিতেই ভিড় জমায় ওই পড়ুয়ারা। ভিড় সামলাতে হিমসিম খেতে হয় শিক্ষকদের। স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশ ছিল সোমবার বেলা ৩টের মধ্যে স্কুল পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের দু’কেজি চাল এবং দু’কেজি করে আলু তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দিতে হবে। কিন্তু সেটা বিলি করতে গিয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের স্কুলগুলিতে অভিভাবকদের পাশাপাশি যেভাবে ছোট ছোট পড়ুয়াদের ভিড় চোখে পড়ল, তাতে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সচেতনতাই প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
রাজ্য জুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পড়ুয়ারা যাতে মিড-ডে মিল থেকে বঞ্চিত না হয়, সে জন্য মাথাপিছু ২ কেজি করে চাল ও আলু দেওয়ার নির্দেশ ছিল। জেলা জুড়ে ২৪০০ প্রাথমিক স্কুল, প্রায় ৭০০ উচ্চ-প্রাথমিক ও ২০০-র মতো এমএসকে, এসএসকে, মাদ্রাসা শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ পড়ুয়া মিড-ডে মিলের আওতায় রয়েছে। চাল আলু পাওয়ার জন্য স্কুলে স্কুলে ভিড় বা জমায়েত তাই ভালই ছিল।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কীভাবে মাত্র একবেলার মধ্যে এত সংখ্যক পড়ুয়াকে তাদের প্রাপ্য চাল-আলু বিলি করা হবে, তা নিয়ে চাপা ক্ষোভেরও সঞ্চার হয়েছিল শিক্ষকদের একাংশের। এ দিন তা বিলি করতে গিয়ে হিমসিম খেতে হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। বিশেষ, করে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে। কিন্তু করোনা সংক্রমণ রুখতে যখন রাজ্যজুড়ে লকডাউন করতে হচ্ছে, তখন এই খুদে পড়ুয়াদের জমায়েত এড়ানো যেত কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, নির্দেশিকায় অভিভাবকদের আসতে বলা হয়েছিল, পড়ুয়াদের নয়। তবে বাস্তব চিত্র হল, বেশ কিছু স্কুল অভিভাবকেরা নন, এসেছিল শুধু পড়ুয়ারাই। অভিভাবকেদের দাবি, অনেক উচ্চ-প্রাথমিক স্কুলে বলা হয়েছিল যে পড়ুয়াদেরও আসতে হবে। তাই বেশ ভিড় হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক বলছেন, “অনেক দরিদ্র পরিবারের কাছেই স্কুলের মিড-ডে মিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। জরুরি পরিষেবা দিতেই তাই সরকারের এমন সিদ্ধান্ত। কোথাও পড়ুয়াদের আসতে বলা হয়নি। তারপরও অনেকে অভিভাবকেরা পড়ুয়াদের সঙ্গে নিয়ে এসেছেন বা তাঁরা নিজেরা না এসে সন্তানদের পাঠিয়েছেন। এত দ্রুত কাজ সারতে হয়েছে বলে কিছু অসুবিধা
হতে পারে।”