প্রতীকী ছবি
ভিন্ রাজ্য থেকে হাঁসখালির দক্ষিণপাড়ায় ফিরেই মঙ্গলবার রাতে গাঁয়ের মাঠে মদের ঠেক বসিয়েছিলেন কিছু পরিযায়ী শ্রমিক। বুধবার আবার ময়ূরহাটে যে বিরাট হাট বসে, সেখানে অবলীলায় ঘুরতে দেখা দিয়েছে এ রকম বেশ কিছু লোকজনকে। তেহট্টে মাঠপাড়ায় থেকে চাপড়ায় থলি হাতে বাজার করতে দেখা দিয়েছে এ রকম অনেককে। এলাকা থেকে একের পর এক অভিযোগ পেয়ে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। অথচ এই সব লোকেদের বাড়ির দেওয়ালে নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছিল যে এঁরা হোম কোয়রান্টিনে আছেন।
রবিবার থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শ্রমিকরা ঘরে ফিরতে শুরু করেছিলেন। তাঁরা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছেন। প্রথম দিকে তাঁরা ঢুকেছেন কার্যত বিনা নোটিসেই। পরে জেলায় ঢোকা বেশ কয়েকটি বাস আটক করে যাত্রীদের পরীক্ষা করে একই ভাবে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়। অনেককে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কোয়রান্টিনে। তবে তার পরের দিন থেকে আস্তে আস্তে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হতে থাকে।
সোম এবং মঙ্গলবারও নানা ভাবে শ্রমিকেরা গ্রামে ফেরেন। তাঁদের চিহ্নিত করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠাতে থাকেন আশাকর্মীরা। চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে এ দিনও ৪৬৭ জন পরিযায়ী শ্রমিক পরীক্ষা করিয়ে গিয়েছেন। যদিও এখনও পর্যন্ত ব্লকের প্রায় দু’হাজার শ্রমিকের মধ্যে কারও শরীরেই করোনার লক্ষণ পাওয়া যায়নি বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি। প্রায় একই অবস্থা পাশের তেহট্ট মহকুমার ব্লকগুলিতেও। তেহট্ট ১ ব্লকে ১,২২৪ জন, তেহট্ট ২ ব্লকে ২,২০০ জন, করিমপুর ১ ব্লকে প্রায় ৫০০ জন আর করিমপুর ২ ব্লকে প্রায় সাড়ে চারশো পরিযায়ী শ্রমিককে চিহ্নিত করে হাসপাতালে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছ বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রায় একই অবস্থা জেলার অন্য ব্লকগুলিতেও।
প্রশ্ন উঠছে, ভিন রাজ্য থেকে ফেরা এই বিরাট সংখ্যক লোককে ঘরে আটকে রাখা কি শুধু প্রশাসনের পক্ষে সম্ভব? এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “খুবই কঠিন কাজ। তাই আমরা সামাজিক চাপ তৈরির করার চেষ্টা করছি। স্থানীয় মানুষকেও সচেতন ভাবে এগিয়ে আসতে হবে।” এক পুলিশকর্তার কথায়, “পুরোটাই বুঝিয়ে হবে না। আমরা চেষ্টাও করেছিলাম। কিন্তু কাজ না হওয়ায় রাতে বাড়ি দিয়ে কার্যত হুমকি দিয়ে আসা হচ্ছে।” জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (২) অসিত দেওয়ান বলছেন, “বাইরে থেকে ফিরে আসা লোকজনকে যে ভাবেই হোক ঘরের ভিতরে রাখতেই হবে। সেটা কিন্তু করা যাচ্ছে।”