প্রতীকী ছবি
করোনা পরিস্থিতিতে ভিন রাজ্যে আটকে পড়া বাংলার বাসিন্দাদের ব্যাপারে সব মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীরাও নিজ উদ্যোগে সেই কাজে নেমেছেন। কেউ ভিন রাজ্যে আটকে পড়া রাজ্যের নাগরিকদের সাহায্য করছেন, কেউ বা নিজ দফতরকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা জীবাণুমুক্ত করছেন। কংগ্রেস ও বাম নেতারাও এই কাজে যুক্ত হয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় শনিবার বলেন, ‘‘বহু মানুষ ফিরতে চাইছেন। কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলির জন্য আমাদের মুখ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে হাসপাতাল, বাজারের মতো জনবহুল জায়গাগুলিকে জীবাণুমুক্ত করার কাজ করছে দমকল। তবে কলকাতার কিছু জায়গায় পুরসভাও ওই কাজ করেছে। দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু জানান, শহরকে যতটা সম্ভব জীবাণুমুক্ত করার জন্য দমকলের ১৪৬টি কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। থানা থেকে শুরু করে সরকারি দফতরকেও জীবাণুমুক্ত করার কাজ করা হবে।
দমকল সূত্রের খবর, বাস স্ট্যান্ড, হাসপাতাল, বাজার যেখানে লকডাউনের পরেও জনসমাগম ঘটছে সেই সব জায়গায় ফগিং মেশিনের সাহায্যে জলের সঙ্গে সোডিয়াম হাইপ্রোক্লোরাইট মিশিয়ে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। দমকলের ডিজি জগমোহন জানান, শনিবার এসএসকেএম হাসপাতালকে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, গড়িয়াহাটের মতো বাজারে যাঁরা আসছেন তাঁদের গেটের বাইরে হাত ধুয়ে তবে ভিতরে ঢুকতে বলা হয়েছে। এর জন্য গড়িয়াহাট থানা বাজারের গেটের বাইরে অস্থায়ী জলের লাইন বসিয়েছে। রাখা হয়েছে সাবানের ব্যবস্থাও। প্রবীণ নাগরিকদের যাতে ওষুধ বা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী আনতে বাড়ির বাইরে বেরোতে না-হয় তার জন্য ভবানীপুর, আলিপুর, টালা থানা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।
ভিন রাজ্যে আটকে থাকা বাংলার মানুষের জন্য তৎপর পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। হলদিয়ায় বসেই সেই সব রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার পাশাপাশি এদিন হিমাচলে আটকে পড়া একটি দলের জন্য অর্থ সাহায্যের ব্যবস্থাও করেছেন তিনি। একই ভাবে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীও গত ক’দিন ধরে ভিন রাজ্যে আটকে পড়া বাঙালিদের ফিরিয়ে আনতে তৎপর রয়েছেন। ওই সব রাজ্যে কংগ্রেস নেতা, পদাধিকারী ও প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তিনি।
কলকাতায় একাধিক জায়গায় খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বিভিন্ন ওষুধের দোকানে কত পরিমাণে ওষুধ রয়েছে তার খোঁজ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীও নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে ৫ হাজার প্যাকেট চাল, আলু, তেল বন্টন করেছেন। কলকাতা পুরসভার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ সাধ্য মতো লড়ছেন সিপিএম কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী। বিধাননগরে ৫০ হাজার মানুষের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছনোর পরিকল্পনা নিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক সুজিত বসু। এ দিন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা এ রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সব প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বুথ কমিটির মাধ্যমে বৃদ্ধ ও গরিবদের সাহায্যের কথা বলা হয়েছে।
রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি ত্রাণ তহবিলে ৫০ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূলের সাংসদেরা। এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে এই টাকা দেওয়া হবে। দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তহবিলে ১ কোটি টাকা দিচ্ছেন। শুধু রাজনৈতিক দলই নয়, একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ক্লাবও শহরের পথে রান্না করা খাবার বিলি করেছেন।