Coronavirus in West Bengal

তথ্য বার করতে স্বাস্থ্যকর্মীরাই যেন গোয়েন্দা

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, নোভেল করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় আসল তথ্যের সন্ধান পাওয়া খুব জরুরি।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

অশ্বক্ষুরাকৃতি টেবিল ঘিরে তুমুল ব্যস্ততা। ফোনে একের পর এক ক্ষুরধার প্রশ্ন করছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। রাজ্য এডস কন্ট্রোলের কনফারেন্স রুম এখন কার্যত গোয়েন্দা-কক্ষ।

Advertisement

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, নোভেল করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় আসল তথ্যের সন্ধান পাওয়া খুব জরুরি। আক্রান্তের সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন, সেই ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার কাজ ওই তথ্যের উপরেই নির্ভরশীল। তা না-হলে গোষ্ঠীতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, অসুস্থ হওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কোথায় গিয়েছিলেন, কাদের সঙ্গে মিশেছিলেন— সেই তথ্য গোপন করে যাচ্ছেন তাঁর পরিজনেরা। গোপন কথাটি যাতে গোপন না-থাকে, তা নিশ্চিত করছে স্বাস্থ্য ভবনের ‘ট্র্যাকিং টিম’।

তবে এ কাজ সহজ নয়। পেশাদার গোয়েন্দা না হলেও গোয়েন্দাগিরি করেই পেট থেকে তথ্য বার করছেন ট্র্যাকিং টিমের সদস্যেরা। টেবিলের এক প্রান্তে তিনটি ল্যান্ডফোনে কান পেতে রয়েছেন মহিলা কর্মীরা। অন্য প্রান্তে দু’টি ল্যান্ডফোনেও একই রকম ব্যস্ততা। এক কোণে পড়ে থাকা খাবারের প্যাকেটের দিকে হুঁশ নেই কারও। ফোনে তথ্য যাচাইয়ের কাজ করে যাচ্ছেন ‘কোভিড যুদ্ধে’র কর্মীরা। আক্রান্তের পরিজন হয়তো বলছেন, তিনি বিদেশ যাননি বা বিদেশ অথবা করোনা প্রভাবিত রাজ্যের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই। সেই তথ্যসূত্র ধরে তাঁকে পাল্টা জেরা করছে ‘ট্র্যাকিং টিম’।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতরের খবর, হুগলির শেওড়াফুলির বাসিন্দা এক করোনা আক্রান্তের কর্মসূত্রে দুর্গাপুরে যাতায়াত রয়েছে, তা জানা ছিল। কিন্তু তাঁর বড়জোড়া-যোগ রীতিমতো জেরা করে বার করে আনেন ‘ট্র্যাকিং টিম’-এর কর্মীরা। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, কোথায় গিয়েছিলেন জানতে চাইলে প্রায় সকলে অমায়িক ভঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, তাঁরা কোথাও যাননি।

এই পরিস্থিতিতে ‘ট্র্যাকিং টিম’-এ গোয়েন্দা পুলিশ রাখার বিষয়টিও বিবেচনার মধ্যে এসেছে। কিন্তু সঙ্গত কারণে সেই প্রস্তাব কার্যকর হয়নি। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, কেউ করোনা আক্রান্তের আত্মীয়, তা জেনে গেলে পরিজনেরা অসুবিধায় পড়তে পারেন। তাই তথ্য গোপনের চেষ্টা করছেন অনেকে। পুলিশের নাম শুনলে অনেকে ভয় পেয়ে যেতে পারেন। তাই স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরাই আপাতত তথ্যান্বেষীর ভূমিকায়।

স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ট্র্যাকিং টিম খুব ভাল কাজ করছে। গোয়েন্দাদের মতো যে ভাবে ওঁরা তথ্য বার করে আনছেন, তা এই ভাইরাসের মোকাবিলায় খুবই কাজে লাগছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন