Coronavirus in West Bengal

টিকার আশায় ফের শবরীর প্রতীক্ষা

বেসরকারি কেন্দ্রে প্রতিষেধক দেওয়া আপাতত বন্ধ মানে এই নয় যে, সরকারি হাসপাতাল বা টিকা কেন্দ্রে গেলেই তা পাওয়া যাবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২১ ০৫:৪৫
Share:

ফাইল চিত্র।

আবার অপেক্ষার দিন গোনা শুরু!

Advertisement

বেসরকারি কেন্দ্রে কবে আবার করোনা প্রতিষেধক দেওয়া হবে, সেই বিষয়ে শুক্রবার রাত পর্যন্ত কোনও নিশ্চয়তা মেলেনি। তাই বেসরকারি হাসপাতাল বা প্যাথলজি কেন্দ্রে যাঁরা প্রথম ডোজ় পেয়েছেন, তাঁদের আপাতত অপেক্ষা করতে হবে। অথবা দ্বিতীয় ডোজ়টি নিতে হবে সরকারি হাসপাতালে বা কেন্দ্রে গিয়ে।

বাংলায় প্রতিষেধকের টানাটানির মধ্যেই কেন্দ্র ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের প্রতিষেধক দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রস্তুতকারী সংস্থা থেকে সরাসরি টিকা কিনে নিতে হবে বেসরকারি হাসপাতালকে। কিন্তু কী ভাবে কোথা থেকে কতটা পরিমাণে প্রতিষেধক কেনা যাবে, সেই বিষয়ে কোনও বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। তবে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সম্প্রতি কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছে, সরকারি ও বেসরকারি দুই জায়গার জন্যই প্রতিষেধকের ব্যবস্থা করা হোক। কিন্তু তার পরেও কবে ফের প্রতিষেধক মিলবে, বেসরকারি হাসপাতালগুলি তা জানে না। পূর্ব ভারতে বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া বলেন, "প্রতিষেধক পাওয়ার পরেই পুনরায় বেসরকারি কেন্দ্রে তা দেওয়ার কাজ শুরু করা যাবে। কিন্তু কবে প্রতিষেধক মিলবে, সেই বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা নেই।"

Advertisement

কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী ৩০ এপ্রিল রাত পর্যন্ত রাজ্যের সব বেসরকারি কেন্দ্রে প্রতিষেধক দেওয়ার পরে যে-টিকা অবশিষ্ট থাকবে, তা স্বাস্থ্য দফতরে ফেরত দিতে বলা হয়েছে। তার পরে কোনও বেসরকারি হাসপাতালের হাতেই আর একটিও প্রতিষেধক থাকার কথা নয়। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘খুব বেশি প্রতিষেধক ফেরত আসবে বলে মনে হয় না। তবে যা পাওয়া যাবে, তা এ বার সরকারি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে।’’ ফলে আজ, শনিবার, ১ মে থেকে প্রায় কোনও বেসরকারি কেন্দ্রে ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের প্রতিষেধক দেওয়ার কর্মসূচি যেমন শুরু করা সম্ভব নয়, তেমনই দ্বিতীয় ডোজ়ও দেওয়া যাবে না।

এই অবস্থায় দ্বিতীয় ডোজ়ের অসংখ্য গ্রাহক ফাঁপরে পড়েছেন। অনিশ্চয়তায় ভুগছে বেসরকারি হাসপাতালগুলিও। পিয়ারলেস হাসপাতালের তরফে সুদীপ্ত মিত্র বলেন, ‘‘প্রতিষেধক প্রদান অনিশ্চিত। সব গ্রাহককে জানিয়েছি, প্রতিষেধক না-এলে দিতে পারব না। আগামী সপ্তাহের শেষ দিকে খোঁজ নিতে বলেছি। আমরা আশা করছি, শীঘ্রই কোনও একটা পথ বেরোবে।’’

বেসরকারি কেন্দ্রে প্রতিষেধক দেওয়া আপাতত বন্ধ মানে এই নয় যে, সরকারি হাসপাতাল বা টিকা কেন্দ্রে গেলেই তা পাওয়া যাবে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যকর্মী, প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা এবং ৪৫ বছর বা তার বেশি বয়সিদের বিনামূল্যেই প্রতিষেধক দেওয়া হবে। কিন্তু প্রতিষেধক যেমন যেমন পাওয়া যাবে, তার উপরেই নির্ভর করবে কোন কেন্দ্রে কবে ক’জন তা পাবেন। দ্বিতীয় ডোজ় প্রাপকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে এটাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, যাঁরা বেসরকারি হাসপাতাল বা চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রথম ডোজ় নিয়েছেন, তাঁরা কোনও সরকারি প্রতিষেধক কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় ডোজ় নিতে পারবেন।

স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের জন্য প্রতিষেধক রাজ্যে আসার পরেই তাঁদের টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হবে। সেই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিও দেবে রাজ্য সরকার। কিন্তু কবে সেটা হবে, স্পষ্ট করে কেউ তা জানাতে পারেননি। রাজ্যে প্রতিষেধক গবেষণার ফ্যাসিলিটেটর স্নেহেন্দু কোনার বলেন, "ছোটখাটো প্রতিষেধক কেন্দ্র তো ছেড়েই দিন। সব বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কী ভাবে প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে কত তাড়াতাড়ি চুক্তিবদ্ধ হতে পারবে, সেই ব্যাপারেও সংশয় থেকে যাচ্ছে।" সব মিলিয়ে বেসরকারি কেন্দ্রে প্রতিষেধক আসার অনিশ্চয়তার মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ় নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হল। একই ভাবে ১ মে থেকে প্রতিষেধক পাওয়ার জন্য ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের মধ্যে যাঁরা নাম লিখিয়েছেন, জল ঢেলে দেওয়া তাঁদেরও প্রত্যাশায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন