এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণ নয় পশ্চিমে, আশায় স্বাস্থ্য কর্তারা
Coronavirus

তিনেই আটকে আক্রান্ত

সংক্রমণ ছড়ানোর সব উপাদানই মজুত রয়েছে জেলায়। জেলার স্বাস্থ্যভবনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, মার্চে বিদেশ থেকে জেলায় ফিরেছেন অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২০ ০০:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি

অন্তত দু’টি এলাকায় গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরে। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ভয়ও ছিল। তবে এখনও পর্যন্ত ওই সংক্রমণ ঠেকানো গিয়েছে। স্বভাবতই স্বস্তিতে জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। আক্রান্তদের একজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আরও দু’জন বাড়ি ফেরার পথে। সব মিলিয়ে করোনা-যুদ্ধে জেতার আশা দেখছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।

Advertisement

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) গিরীশচন্দ্র বেরা মানছেন, ‘‘আমাদের জেলার কোথাও করোনা গোষ্ঠী সংক্রমণের আকার ধারণ করেনি। প্রাথমিকভাবে দু’টি এলাকা নিয়ে একটা উদ্বেগ ছিল। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। এখন সেই উদ্বেগও কেটেছে।’’ তিনি জুড়ছেন, ‘‘তবে আত্মসন্তুষ্টির কোনও জায়গা নেই। করোনাভাইরাসের চরিত্র কার্যত সম্পূর্ণ অজানা। আমাদের সবস্তরের কর্মীরা সব সময় কাজ করছেন। তাঁদের সেই দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।’’ জেলার স্বাস্থ্যভবনের ওই সূত্রের দাবি, পশ্চিম মেদিনীপুরে সমন্বয় রেখে কাজ চলছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সমন্বয় রেখে কাজ করায়। সাধারণ প্রশাসন, পুলিশ-প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর একসঙ্গে কাজ করছে, জেলাস্তরে, ব্লকস্তরেও।’’

অথচ, সংক্রমণ ছড়ানোর সব উপাদানই মজুত রয়েছে জেলায়। জেলার স্বাস্থ্যভবনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, মার্চে বিদেশ থেকে জেলায় ফিরেছেন অনেকে। বিদেশ ফেরতের সংখ্যাটা প্রায় দু’শোর কাছাকাছি। ভিন্ রাজ্য থেকেও প্রায় আঠাশ হাজার মানুষ ফিরেছেন। নিজামুদ্দিন যোগও মিলেছে জেলায়। তবে সবাইকে দ্রুত চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের অবাধ গতিবিধি ঠেকানো গিয়েছে। সকলকে কোয়রান্টিন করা গিয়েছে। সূত্রের খবর, জেলার দু’টি এলাকা— দাসপুরের এক এলাকা এবং দাঁতনের এক এলাকায় গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা ছিল। দাসপুরের ওই এলাকায় মুম্বই ফেরত এক যুবক করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে আক্রান্ত হন তাঁর স্ত্রী ও বাবা। দ্রুত ওই যুবকের সরাসরি সংস্পর্শে আসা সকলকে কোয়রান্টিন করা হয়। ফলে, সংক্রমণ আর ছড়ায়নি। একই ভাবে সরাসরি সংস্পর্শে আসা সকলকে কোয়রান্টিন করে সংক্রমণ ঠেকানো গিয়েছে দাঁতনেও। দাঁতনের ওই এলাকার এক বৃদ্ধের করোনা ধরা পড়ে ওড়িশায়। ওই বৃদ্ধ আবার মেদিনীপুরের দুই হাসপাতাল ঘুরে ওড়িশার হাসপাতালে গিয়েছিলেন। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার স্বীকারোক্তি, ‘‘দাসপুরের থেকে উদ্বেগ বেশি ছিল দাঁতন নিয়েই। কারণ, দাঁতনের ওই বৃদ্ধ অনেকের সরাসরি সংস্পর্শে এসেছিলেন। সংস্পর্শে আসা সকলের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ হয়েছে। আর কোনও উদ্বেগ নেই।’’ জেলা প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, ওই দুই এলাকায় লকডাউনও পুরোপুরি কার্যকর করা সম্ভব হয়েছে।

Advertisement

মেদিনীপুর মেডিক্যালের এক সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত জেলায় যে সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা হয়েছে, তার মধ্যে নামমাত্রের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। শতাংশের নিরিখে মাত্র ১.৭৩। ওই সূত্রে খবর, শুক্রবার পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের ১৭৩ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে রিপোর্ট পজিটিভ হয়েছে মাত্র ৩ জনের। দাসপুরের ওই যুবকের, তাঁর স্ত্রীর এবং বাবার। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত জেলায় তিনজনই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। একই পরিবারের। একজন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকি দু’জনও ভাল রয়েছেন বলে জেনেছি। শীঘ্রই বাড়ি ফিরবেন।’’

আরও পড়ুন: আটকে পড়া শ্রমিকদের কাউন্সেলিং

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন