Coronavirus in West Bengal

সঙ্কটজনক রোগীর নমুনা পরীক্ষায় অগ্রাধিকার রাজ্যের

সঙ্কটজনক রোগীর লালারস সংগ্ৰহ করে রাখা হচ্ছে, বলা হয়েছে তার গায়ে স্পষ্ট করে চিহ্নিত করে দ্রুত ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ০৭:১৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

নমুনা সংগ্রহ করার সময়েই এ বার থেকে রোগীকে দেখে বুঝতে হবে তাঁর সমস্যা কতটা গুরুতর এবং কত তাড়াতাড়ি তাঁর চিকিৎসা শুরুর প্রয়োজন। সেই মতো ওই রোগীর আরটিপিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট তৈরিতে আগ্রাধিকার দিতে হবে। উপসর্গহীন ও মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগীর থেকেও এক জন মাঝারি বা গুরুতর উপসর্গ যুক্ত রোগীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আগে পৌঁছে দিতে হবে।

Advertisement

আরটিপিসিআর পরীক্ষায় রিপোর্ট তৈরির নতুন এই পরামর্শ-নির্দেশিকা (অ্যাডভাইজ়রি) জারি করল স্বাস্থ্য দফতর। বঙ্গে সংক্রমণ ক্রমবর্ধমান। তার মধ্যেই করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে গিয়ে চরম ভোগান্তির অভিযোগ আসছে। আর সেই রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়াতে অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ উঠছে।

বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যের সই করা ওই পরামর্শ-নির্দেশিকাতে নমুনা সংগ্রহের সময়েই তাই বিশেষ কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। যেমন, নমুনা সংগ্রহের সময়ই 'এসআরএফ' নামক আইডি জেনারেট করতে হবে। এমনকী যে বাক্সে ওই সঙ্কটজনক রোগীর লালারস সংগ্ৰহ করে রাখা হচ্ছে, বলা হয়েছে তার গায়ে স্পষ্ট করে চিহ্নিত করে দ্রুত ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে ওই ল্যাবরেটরির কর্মীরা বাক্সটি দেখেই বুঝতে পারেন যে জরুরি ভিত্তিতে কোন নমুনার পরীক্ষাটি আগে করতে হবে। অবিলম্বে এই পরামর্শ-নির্দেশিকা কার্যকর করার কথাও বলেছে স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

সঙ্কটজনক রোগীর বিপদ কাটাতে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট না থাকলেও রোগীকে সারি ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা শুরুর কথা আগেই বলেছে স্বাস্থ্য দফতর। সরকারি, বেসরকারি সমস্ত হাসপাতালকেই সেই নির্দেশ মানতে বলা হয়েছে। তার পরেও এই নির্দেশিকার ফলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরুর প্রয়োজন এমন রোগীর ক্ষেত্রে অনেক উপকারী হবে বলেই মত স্বাস্থ্য শিবিরের। তাঁদের একাংশ এটাও বলছেন, ‘‘সংক্রমণ রুখতে এবং সঙ্কটজনক রোগীর চিকিৎসায় একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষের কিছুতেই হেলদোল নেই।’’

হেলদোল যে নেই তা মালুম হচ্ছে বঙ্গের দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধির রেখাচিত্র দেখলেই। এ দিনও নতুন করে ২০ হাজার ৮৩৯ জন আক্রান্ত হন। তার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনাতে ৪১৩১ জন, কলকাতাতে ৩৯২৪ জন আক্রান্ত হন। এছাড়াও এক হাজারের উপরে আক্রান্ত হয়েছে তিনটি জেলায়। যেমন হাওড়াতে ১২৭৬, হুগলিতে ১২৩৬, দক্ষিণ ২৪ পরগণাতে ১২৩২ জন আক্রান্ত। পাশাপাশি ৫০০-র উপরে আক্রান্ত হয়েছে পশ্চিম বর্ধমান (৯৬৯), পূর্ব বর্ধমান (৬৯৭), পূর্ব মেদিনীপুর (৯৯৩), পশ্চিম মেদিনীপুর (৯০৩), বীরভূম (৯০৫), নদিয়া(৯৫২), দার্জিলিং (৫৭৫)-জেলায়। এ দিন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১২৯ জনের।

করোনা মোকাবিলায় বিভিন্ন আর্জি রাখছেন চিকিৎসক সংগঠনগুলিও। পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি, কোভিড শয্যা-অ্যাম্বুলেন্স বাড়ানো, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য আলাদা কোভিড হাসপাতাল চালু-সহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে তাঁরা এ দিন স্বাস্থ্য ভবনে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বলে জানান, সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস। অন্য ডাক্তাররাও বলছেন, ‘‘সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও কোভিড বিধি মেনে চললেই করোনাকে প্রতিহত করা সম্ভব। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষ এখনও সচেতন নন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন