Coronavirus

গ্রামে ফিরেই ‘স্কুলে’ ভর্তি!

করোনা সংক্রমণ রুখতে মুর্শিদাবাদের প্রান্তিক ওই গ্রামের সচেতনতা অবাক করেছে জেলা প্রশাসনকে।

Advertisement

জীবন সরকার

ধুলিয়ান শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২০ ০৪:০২
Share:

প্রাথমিক স্কুলের দাওয়ায় আশ্রয় ভিন্‌ রাজ্যের শ্রমিকদের। দেওয়া হচ্ছে খাবার। ধুলিয়ানে। নিজস্ব চিত্র

ভিন্ রাজ্য কিংবা ভিন জেলা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরে, পুরনো অভ্যাসেই মোটরবাইক হাঁকানো থেকে মাচার আড্ডা মেতে ওঠা— মুর্শিদাবাদের আনাচ কানাচে বিভিন্ন গ্রামে কান পাতলেই ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের এমনই চেনা চলাফেরার কথা কানে আসছিল। শমসেরগঞ্জের চাচণ্ড গ্রামে ঘরে ফেরা ১২ শ্রমিক সেই চেনা রীতিতেই হাঁটতে চেয়েছিলেন। সুর কাটল গ্রামের কাছাকাছি আসতেই।

Advertisement

মঙ্গলবার গায়ে গা লাগানো দুই গ্রাম, আলমশাহী ও ভবানীবাটীতে ঢোকার মুখেই তাঁদের ঘিরে ধরেন পড়শিরা। তার পরে স্পষ্ট জানিয়ে দেন— চেনা অভ্যাস এ বার ছাড়তে হবে। প্রায় জোর করেই তাঁদের এনে তোলা হয় আলমশাহি গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে। জানিয়ে দেওয়া হয়, সকালের চা, তিন বেলা খাবার, আড্ডা, সবই চলতে পারে। তবে, স্কুল চত্বরের মধ্যে, আপাতত ১৪ দিন তাঁদের ‘স্কুল-কোয়রান্টিন’। তার বাইরে পা নৈব নৈব চ।

করোনা সংক্রমণ রুখতে মুর্শিদাবাদের প্রান্তিক ওই গ্রামের সচেতনতা অবাক করেছে জেলা প্রশাসনকে। শমসেরগঞ্জের বিডিও জয়দীপ চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘ওই দুই গ্রামের মানুষ নিজেরাই যে ভাবে সচেতনতা দেখিয়েছেন তা অবাক করেছে। ঘটনাটি সত্যিই শিক্ষণীয়।’’ শমসেরগঞ্জের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তারিফ হোসেনও প্রশংসা করছেন গ্রামবাসীদের উদ্যোগের, ‘‘খুবই স্বস্তির কথা যে, গ্রামের মানুষ নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে করোনা রুখতে পথে নেমেছেন। তবে দেখতে হবে, কোয়রান্টিনে রাখা ওই শ্রমিকদের মধ্যে কোনও উপসর্গ দেখা দিলে যেন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে খবর পাঠানো হয়।’’

Advertisement

শমসেরগঞ্জের আলমশাহী ও ভবানীবাটী— দু’টি গ্রাম থেকেই বহু শ্রমিক দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজে যান। রাজমিস্ত্রি, মোটর মেকানিক কেউ বা নিতান্তই কাপড়জামা ফেরি করার কাজ করেন। এলাকার পরিচিত সমাজসেবী বজলুর রহমান বলেন, ‘‘করোনার প্রকোপ যে-ভাবে ছড়াচ্ছে তাতে ভিন রাজ্য থেকে ফিরলে এই দায়িত্বটুকু নেওয়া খুবই জরুরি। কারণ, ঘরে ফেরা মানুষ অনেক সময়েই কোয়রান্টিনের নিয়মটুকু মানতে চাইছেন না। তাই এ ছাড়া কোনও উপায় ছিল না।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন