Hajj House

হজ হাউসের কোয়রান্টিন সামলাতে বাড়ি ছেড়েছেন ডব্লিউবিসিএস অফিসার

৩১ মার্চ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হজ হাউস কোয়রান্টিন কেন্দ্র হিসেবে তৈরির জন্য প্রস্তুত হয়। ওই কেন্দ্রে প্রায় তিনশো মানুষ রয়েছেন।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ০৩:২৩
Share:

এই হজ হাউসকে কোয়রান্টিন কেন্দ্র করা হয়েছে । ফাইল চিত্র

একটা নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। তাতে কারও কারও মনে ভয় চেপে বসছে। ভয় কাটাতে লাগাতার আলোচনাকেই হাতিয়ার করছেন কোয়রান্টিন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তেরা। নিউটাউনের মদিনাত-উল-হুজ্জাজ-এ (হজ হাউস) প্রতিনিয়ত প্রতিটি খুঁটিনাটি প্রয়োজনই সামলাচ্ছেন ডব্লিউবিসিএস অফিসার মহম্মদ নকি। পরিবার-পরিজন ছেড়ে ওই কেন্দ্রে টানা ১২ দিন ধরে রয়েছেন। ওখানেই মেঝেতে মাদুরের উপরে দু’চোখের পাতা এক করার চেষ্টা করছেন। ব্যস্ততায় সেই সুযোগও সব সময় মিলছে না। নকির কথায় যদিও, এটা তেমন কিছু নয়। তিনি দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র।

Advertisement

৩১ মার্চ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হজ হাউস কোয়রান্টিন কেন্দ্র হিসেবে তৈরির জন্য প্রস্তুত হয়। ওই কেন্দ্রে প্রায় তিনশো মানুষ রয়েছেন। যার মধ্যে কয়েক জনকে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে যাওয়া সকলের রিপোর্টই নেগেটিভ।

শুরুর দিকে কোয়রান্টিন কেন্দ্র পরিষ্কার রাখা থেকে খাবার দেওয়া সব নিয়েই ‘ভয়’ চেপে বসেছিল সাফাইকর্মী থেকে শুরু করে অন্য কর্মীদের মধ্যে। সারা বছর যে সব নিরাপত্তা কর্মী হাউসের পাহারায় থাকেন, তাঁরাও ভিতরে ঢুকতে রাজি হচ্ছিলেন না। এই অবস্থায় আলোচনাকেই প্রাধান্য দেন নকি। সাফাইকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী বা খাবার যাঁরা দেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু খুব একটা কাজ হয়নি। তখন ওই সব কর্মীদের সঙ্গে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে থাকা চিকিৎসকদের সরাসরি আলোচনার বন্দোবস্ত করেন তিনি। তার পর ভয় ভাঙতে শুরু করে কর্মীদের। সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিত্ত নিগমের জেনারেল ম্যানেজার নকি জানাচ্ছেন, এখন নিয়ম মেনে সব কাজটাই স্বচ্ছন্দে করছেন কর্মীরা।

Advertisement

নিউটাউনের ওই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রয়েছেন পাঁচটি দেশের মানুষজন। একটা বদ্ধ জায়গায় তাঁদের রেখে দেওয়া হচ্ছে বলে ভাবছিলেন প্রথম ভাবছিলেন ওঁরা। আলোচনার মাধ্যমে বোঝানো হয়, কে করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছেন আর কে আসেননি, তা কারও জানা নেই। কারণ, এই কেন্দ্রে যাঁরা আছেন, তাঁদের কেউ কেউ (সকলে নন) দিল্লির তবলিগি মরকজের জমায়েতে ছিলেন। ফলে এই কেন্দ্রের সকলেরই সতর্ক থাকাটা জরুরি, এটা ওঁরা এখন বুঝতে পেরেছেন।

কোয়রান্টিন কেন্দ্রের আবাসিকরা এমনিতেও প্রায়ই করোনা নিয়ে বিভিন্ন বিষয় নকির কাছে, চিকিৎসকদের কাছে জানতে চান। সেই জানা-অজানার ফারাক ঘোচানোর পাশাপাশি নিয়মিত আলাপ-আলোচনার মধ্যে দিয়ে সবাইকে মানসিক ভাবে চাঙ্গাও রাখছেন নকি-রা। ১২ দিন কেটে গিয়েছে, পরিবার-পরিজনকে ছেড়ে বাড়ির চেনা স্বাচ্ছন্দ্য সরিয়ে রেখে ওই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে দিন কাটাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গ হজ কমিটির এই এগজ়িকিউটিভ অফিসার। তাঁর কথায়, ‘‘যে কোনও বড় কাজের ক্ষেত্রে প্রত্যেকের নির্দিষ্ট দায়িত্ব থাকে। তা সামলাতে হয়। আমিও আমার দায়িত্ব পালন করছি।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন