বাঙুর থেকে ছুটি চল্লিশের
Coronavirus

বঙ্গে ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১৫, এনআরএসে সংক্রমিত ৯

বুলেটিনে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩৩। ফলে গত ৪৮ ঘণ্টায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু হলে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৮।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২০ ০৪:১০
Share:

ছবি: এএফপি।

রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৮। শনিবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে যে করোনা-বুলেটিন প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দু’দিনের তথ্য আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, শুক্রবারের পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের এবং শনিবারের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। আগের মতো রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা কত, সেই সংক্রান্ত কোনও পরিসংখ্যান দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবারের প্রকাশিত

Advertisement

বুলেটিনে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩৩। ফলে গত ৪৮ ঘণ্টায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু হলে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৮।

শুক্রবার নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৭, শনিবার সেই সংখ্যা ৭০। তবে এত দিন মোট করোনা অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা দেওয়া হলেও এই বুলেটিনগুলিতে সেই পরিসংখ্যানের উল্লেখ নেই। কো-মর্বিডিটিতে মৃত্যুর সংখ্যার উল্লেখও করা হয়নি। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু কত, তা এই প্রথম লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। বুলেটিন অনুযায়ী, দু’দিনে মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬০ জন। এ দিন এম আর বাঙুরে মোট ৪০ জন রোগীকে একসঙ্গে ছুটি দেওয়ার সময় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা, শ্রমিক-প্রশ্নে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা চায় নবান্ন

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রকে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব বিবেক কুমারের চিঠির সঙ্গে দেওয়া তালিকায় দেখা গিয়েছিল, এ রাজ্যে রেড এবং অরেঞ্জ জ়োনে পশ্চিমবঙ্গে ‘কেস রিপোর্ট’ হয়েছে মোট ৯৩১টি। গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়েছিল, ওই দিন পর্যন্ত রাজ্যে ‘অ্যাক্টিভ কেসে’র সংখ্যা ৫৭২টি। এই আবহে পরিসংখ্যানের ফারাক ঘিরে শুরু হয় জল্পনা। ঘটনাচক্রে, শুক্রবার কোনও মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করেনি স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন একযোগে শুক্রবার এবং শনিবারের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা গিয়েছে, নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও ব্যাপক বেড়েছে। এই দু’দিনে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪৪৫১।

নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ফের আলোচনায় এসেছে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একসঙ্গে ন’জন রোগীর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা। আক্রান্তদের মধ্যে এক জন ক্যানসার রোগীকে এম আর বাঙুরে স্থানান্তরিত

করার সময় এ দিন মৃত্যু হয়েছে। আর এক জন আক্রান্তের মৃত্যু আগেই হয়েছিল। বছর একষট্টির ওই মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। এনআরএসের আক্রান্ত বাকি সাত জনের মধ্যে ৫৫ বছরের এক মহিলা আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আর ছ’জন প্রসূতি বিভাগের রোগী। প্রত্যেকে সন্তান প্রসবের জন্য এনআরএসে ভর্তি হন।

এনআরএসের ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর মেয়ে জানান, তাঁর বাবা যে অ্যাকিউট লিউকেমিয়ার শিকার তা সম্প্রতি জানা যায়। ক্যানসার ধরা পড়ার পরে এনআরএসে তাঁর চিকিৎসা চলছিল।

গত ২৩ এপ্রিল জেনারেল মেডিসিন ওয়ার্ডে প্রৌঢ়কে ভর্তি করানো হয়। গত ৩০ এপ্রিল বাকিদের সঙ্গে তাঁর বাবারও নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এ দিন বিকেলে রিপোর্ট পাওয়ার পরে তাঁকে এম আর বাঙুরে স্থানান্তরিত করানোর সময় অ্যাম্বুল্যান্সেই তাঁর মৃত্যু হয়। মেয়ের অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্সে কোনও অক্সিজেন না থাকায় তাঁর বাবার এই পরিণতি হল। মৃত ব্যক্তি জেনারেল মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন থাকায় ফের চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশকে কোয়রান্টিনে পাঠানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আক্রান্ত প্রসূতিদের এম আর বাঙুরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে খবর। প্রসূতিদের সদ্যোজাতেরা সকলেই সুস্থ রয়েছেন বলে তাঁদের পরিজনেরা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: লকডাউনে উদ্ধার লীলা মজুমদারের পাণ্ডুলিপি

রোগীদের পাশাপাশি এ দিনের আক্রান্তদের তালিকায় রয়েছেন এক আমলা এবং এক ডেন্টাল সার্জন। সংশ্লিষ্ট আমলাকে কয়েক দিন আগে ই এম বাইপাস লাগোয়া এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছিল। করোনা সন্দেহভাজন হিসাবে নমুনা পরীক্ষা করানো হলে তাঁর করোনা ধরা পড়ে। বছর চুয়াল্লিশের ওই আমলা কলকাতা লাগোয়া একটি জেলার গ্রামীণ প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে। ঢাকুরিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে এক ডেন্টাল সার্জনের ডায়ালিসিস করানোর আগে করোনা পরীক্ষা করা হলে রিপোর্ট পজ়িটিভ পাওয়া যায়।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন