Coronavirus

করোনা: স্কুল-কলেজ বন্ধ, বোর্ড পরীক্ষা চালু

এর আগে বর্ধিত গরমের ছুটির সময় ক্লাস বন্ধ থাকলেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে যেতে হয়েছিল। এ বার তাঁরা কী করবেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ০৪:৪৩
Share:

করোনা-আতঙ্কের মাঝে মাস্ক পরেই চলছে ক্লাস। শনিবার। পিটিআই

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সোমবার থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। স্কুলের নিজস্ব পরীক্ষাও বন্ধ থাকবে। তবে বিভিন্ন বোর্ডের যে সব পরীক্ষা এখন চলছে, সেগুলি যথারীতি চলবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার বলেন, ‘‘এটা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। ৩০ মার্চ পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

Advertisement

এই ঘোষণার পরে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা চলবে। উচ্চ মাধ্যমিক ও একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ডিউটির সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের পরীক্ষা সংক্রান্ত সব কাজই করতে হবে। যে স্কুলে গার্ড পড়েছে সেখানে গার্ডও দিতে যেতে হবে। সিবিএসই-র দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণি, আইসিএসই, আইএসসি পরীক্ষাও চলবে বলে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য জানান, মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল এবং নার্সিং ইনস্টিটিউট এই নির্দেশের আওতায় পড়ে না। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাজেন্দ্রনাথ পাণ্ডে জানিয়েছেন, এমডি, এমএস পরীক্ষা যথারীতি হবে।

এর আগে বর্ধিত গরমের ছুটির সময় ক্লাস বন্ধ থাকলেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে যেতে হয়েছিল। এ বার তাঁরা কী করবেন? শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘গরমের ছুটি আর করোনা সংক্রমণ তো এক নয়! যাঁদের উচ্চ মাধ্যমিক এবং একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার গার্ড রয়েছে তাঁরা স্কুলে যাবেন। অন্যরা বাড়িতে থাকুন। মাধ্যমিকের খাতা দেখুন। কর্মী, আধিকারিকেরাও বাড়ি থেকে কাজ করুন। খুব প্রয়োজনে অফিসে আসবেন।’’

Advertisement

তবে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদারের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে সব রকম সতর্কতা অবলম্বন করে উচ্চ মাধ্যমিক ও একাদশ শ্রেণির বাৎসরিক পরীক্ষা আদৌ পরিচালনা করা সম্ভব কি না, সে ব্যাপারে স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষা সংসদের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণার প্রয়োজনীয়তা মেনে নিয়ে শিক্ষক সংগঠন আবুটার সহ সভাপতি তরুণ নস্কর স্কুলে গরমের ছুটি কমানোর ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনের সময় বাড়ানোর কথা বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সব পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পঠনপাঠন সংক্রান্ত সব কাজ বন্ধ রাখছে এবং অভ্যন্তরীণ পরীক্ষাও স্থগিত করে দিয়েছে। সভাসমিতিও বন্ধ রাখা হচ্ছে। পড়ুয়ারা চাইলে ছাত্রাবাস ছেড়ে যেতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, প্রশাসনিক ও অতিজরুরি কাজ চলবে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত পঠনপাঠন, সেমিনার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। বন্ধ থাকবে হস্টেলও। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী জানান, আজ, রবিবার দূরশিক্ষার নির্ধারিত পরীক্ষা হবে। বাকি পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরে পরিবর্তিত নির্ঘণ্ট জানানো হবে। তবে প্রশাসনিক বিভাগ খোলা থাকবে। বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পার্ট থ্রি পরীক্ষা রয়েছে। তা পিছিয়ে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। কলকাতার আমেরিকান সেন্টারের লাইব্রেরি এবং ‘ইউএসআইইএফ’ আপাতত বন্ধ থাকছে।

নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আবাসিক স্কুল ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। পড়ুয়াদের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে অভিভাবকদের। শিবপুর আইআইইএসটি ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব ক্লাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রয়োজনে শিক্ষকদের অনলাইনে ক্লাস নিতে বলা হয়েছে। তবে ছাত্রাবাসগুলি খোলা থাকছে। পড়ুয়ারা চাইলে অভিভাবকের সম্মতি নিয়ে বাড়ি যেতে পারবেন। তবে এক বার গেলে ৩১ মার্চের আগে ফিরতে পারবেন না। পড়ুয়াদের ক্যাম্পাসের বাইরে কম যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন