সত্যজিৎ অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
পুরনো শরিকি মামলার জেরে তৃণমূলের এক পুর কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠাল আদালত। জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার। আদালত সূত্রের খবর, ধৃত কাউন্সিলরের নাম সত্যজিৎ অধিকারী। গত পুরভোটে তিনি ৪০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছেন। এলাকায় তিনি ‘ভাইজান’ নামে পরিচিত। তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, শরিকি মামলার জেরে আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে না-পারার ফলেই বিপত্তি ঘটেছে। শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এমন একটা ঘটনার কথা আমি শুনেছি। বৃহস্পতিবারের বোর্ড মিটিংয়ে উনি অনুপস্থিত ছিলেন। খোঁজখবর না নিয়ে মন্তব্য করব না।’’
দলের তরফে বিশদে খোঁজখবর নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। মন্ত্রী বলেন, ‘‘ঠিক কোন প্রেক্ষাপটে কী হয়েছে তা বিশদে খোঁজ নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।’’ তবে সত্যজিৎবাবুর পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে। দিন তিনেক আগে সত্যজিৎবাবু প্রতারণার মামলায় জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা ছিল বলে জানা গিয়েছে। সে দিনই আদালত তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে প্রতারণার অভিযোগে আদালতের নির্দেশে একটি মামলা হয়। তৃণমূলের জেলা কমিটির এক জন নেতা জানান, শরিকি বিবাদের জেরে মামলা হয়। ওই ধরনের মামলায় দীর্ঘ দিন গরহাজির থাকার কারণে অনেক সময়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। সে ক্ষেত্রে আদালতে গিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করাই বিধি। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে তৃণমূলের জেলাস্তরের কোনও নেতা কিংবা আইনজীবীদের কেউ বিষয়টি জানতেন না বলে দাবি করেছেন দলের অনেকেই।
শিলিগুড়ির ৪০ নম্বর ওয়ার্ডেও বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন পড়েছে। সেখানে তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। এলাকায় ‘ভাইজান’, অর্থাৎ সত্যজিৎ অনেক মহলেই জনপ্রিয়। তিনি আচমকা এ ভাবে গ্রেফতার হয়ে জেলবন্দি হওয়ার খবর শুনে অনেকেই বিস্মিত। তবে তৃণমূলের একাধিক নেতা জানান, জেলা আদালতে জামিনের আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।