দোষী সাব্যস্ত ছত্রধর, সাজা ঘোষণা আজ

ইউএপিএ (আনল্‌ফুল অ্যাকটিভিটিজ প্রিভেনশন অ্যাক্ট) মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতো। সোমবার জনগণের কমিটির চার নেতা—ছত্রধর, সুখশান্তি বাস্কে, শম্ভু সরেন ও সাগেন মুর্মুকে দোষী সাব্যস্ত করেন মেদিনীপুর আদালতের বিচারক কাবেরী বসু। আজ, মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর ও লালগড় শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৫ ০৩:৫০
Share:

দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে মেদিনীপুর আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ছত্রধর মাহাতোকে। সোমবার সৌমেশ্বর মণ্ডলের তোলা ছবি।

ইউএপিএ (আনল্‌ফুল অ্যাকটিভিটিজ প্রিভেনশন অ্যাক্ট) মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতো। সোমবার জনগণের কমিটির চার নেতা—ছত্রধর, সুখশান্তি বাস্কে, শম্ভু সরেন ও সাগেন মুর্মুকে দোষী সাব্যস্ত করেন মেদিনীপুর আদালতের বিচারক কাবেরী বসু। আজ, মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা হবে।

Advertisement

জঙ্গলমহলের আন্দোলন-পর্বে ছত্রধরের পাশে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই মঞ্চে দু’জনে সভাও করেছেন। মমতা তখন বিরোধী নেত্রী। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে এ দিন আদালত চত্বরে ছত্রধর বলেন, “আজ যারা (তৃণমূল) ক্ষমতায় আছে, তারা তো আমাদের আন্দোলনে ছিল। আন্দোলনকে স্বীকৃতিও দিয়েছে। অথচ, সেই আন্দোলনের জন্যই আমাদের দোষী সাব্যস্ত করা হল।”

মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য ছত্রধর-প্রসঙ্গে মন্তব্য করেননি। বাঁকুড়ায় তিনি বলেন, ‘‘এটা কোর্টের ব্যাপার।’’ আর তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এমন কিছু বলব না, যাতে বিতর্ক হয়।’’

Advertisement

২০০৯-এর সেপ্টেম্বরে লালগড়ের বীরকাঁড়ে ধরা পড়েন ছত্রধর। তাঁর বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে ৩৯টি মামলা ছিল। ৩৭টিতে জামিন পেয়েছিলেন। পাঁচটিতে বেকসুর খালাসও হন।

আদালতে এ দিন হাজির ছিলেন ছত্রধরের স্ত্রী নিয়তিদেবী। তিনি জানিয়েছেন, সাজা শুনে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করবেন। সন্ধ্যার মুখে খবর পৌঁছয় লালগড়ের আমলিয়া গ্রামে ছত্রধরের বাড়িতে। তাঁর মা বেদনবালাদেবীর হতাশা, ‘‘সুচিত্রা মাহাতো শত খুন করেও পার পেয়ে গেল। আর আমার বড় ছেলে জেলে পচছে। এ কেমন বিচার!’’


কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ছত্রধরের মা বেদনবালা মাহাতো। লালগড়ের আমলিয়া গ্রামে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

ছত্রধরের ভাই নিহত শশধর মাহাতোর প্রাক্তন স্ত্রী ও মাওবাদী নেত্রী সুচিত্রা আত্মসমর্পণ করে নতুন জীবনে ফিরেছেন। এখন তিনি বাঁকুড়ার তৃণমূল নেতা প্রবীর গড়াইয়ের স্ত্রী। আন্দোলন-পর্বে ছত্রধরের ছায়াসঙ্গী বীরকাঁড়ের শ্যামল মাহাতো এখন যুব তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এখন আর এ সব নিয়ে কী বলব।’’

এই পরিস্থিতিতে জেলার সিপিএম নেতা দীপক সরকারের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের নীতিই হল কাজের সময় কাজি, আর কাজ ফুরোলে কিষেনজি। ছত্রধরও তাঁর ব্যতিক্রম নন।’’

ছত্রধরদের সঙ্গেই একই মামলায় অভিযুক্ত রাজা সরখেল এবং প্রসূন চট্টোপাধ্যায়কেও এ দিন দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তবে ইউএপিএ-তে নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন