গেরুয়া উন্মাদনার ধাক্কায় বিরোধী পরিসরে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে দল। তার মধ্যেও সংগঠন পরিচালনায় বেনিয়মের প্রশ্ন রাজ্য কমিটিতে তুলে ধরলেন সিপিএমের তিন নেত্রী।
আলিমুদ্দিনে দলের সদ্য হয়ে যাওয়া রাজ্য কমিটির বৈঠকে সব চেয়ে বড় বোমাটি ফাটিয়েছেন বর্ধমানের নেত্রী অ়ঞ্জু কর! তিনি মহিলা সমিতিরও নেত্রী। তিনি দলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, বেশ কয়েক মাস হয়ে গেলেও মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক এখনও দলের সর্বক্ষণের কর্মী নন!
অথচ সিপিএমে এমন হওয়ার কথা নয়। দলের বা গণসংগঠনের নেতৃত্বে থাকতে গেলে তাঁর হোলটাইমার হওয়াই রেওয়াজ। মহিলা সমিতির ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হওয়ায় সংগঠনে হইচই হচ্ছে বলে অঞ্জুদেবীর বক্তব্য। তাঁর কথায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে গোটা সিপিএমেই। রাজ্য নেতৃত্বের নজর এড়িয়ে কী ভাবে এমন ব্যবস্থা চলছে, দলের অন্দরে চর্চা শুরু করেছেন অনেকেই।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে মহিলা সমিতির রাজ্য সম্মেলন থেকে সংগঠনের নতুন রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন কলকাতার কণীনিকা বসু ঘোষ। তাঁকে যে সর্বক্ষণের কর্মী হতে হবে, আলিমুদ্দিনে ডেকে সেই বার্তা দেওয়া হয়েছিল আগেই। সিপিএম সূত্রের খবর, হোলটাইমার হয়ে যাবেন বলেও এখনও তা হয়ে উঠতে পারেননি রাজ্য সম্পাদক। সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বও পরে আর বিষয়টি খেয়াল করেননি। সমস্যা সেখানেই।
নদিয়া জেলার বিধায়ক রমা বিশ্বাস বৈঠকে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন, শ্রমিক সংগঠন সিটুর সর্বভারতীয় সম্মেলন পুরীতে হয়ে গিয়েছে গত নভেম্বরে। অথচ রাজ্য সম্মেলন হতে চলেছে ১৩-১৫ মে! রাজ্যের বিশেষ কিছু নেতাকে সর্বভারতীয় সংগঠনে কিছু পদে রেখে দেওয়ার জন্যই কি এমন উল্টো ব্যবস্থা, প্রশ্ন তাঁর।
এসএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রী মধুজা সেন রায় আবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলের কলকাতা জেলার কিছু নেতার আচরণ নিয়ে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির প্রতিবাদে মিছিল থেকে গ্রেফতার হয়ে আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে ছিলেন মধুজারা। সেখানে তাঁদের বিবস্ত্র করে তল্লাশির অভিযোগ আনন্দবাজারে প্রকাশিত হয়েছিল। তার পরে মধুজার জবানিতে তাঁদের অভিজ্ঞতা লেখা হয় সিপিএমের মুখপত্রে।
কলকাতা জেলা কমিটিতে এক প্রাক্তন ছাত্রনেতা-সহ একাংশ অভিযোগ করেছিলেন, মধুজা দলের আগে সংবাদমাধ্যমকে গুরুত্ব দিয়েছেন! রাজ্য কমিটিতে মধুজার ক্ষোভ, এমন গুরুতর অভিযোগের বিচার চেয়ে সরব হওয়ার বদলে দলের একাংশ কাল্পনিক অভিযোগ সাজাতে ব্যস্ত! তবে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব তিন নেত্রীরই অভিযোগ শুনেছেন শুধু।