বিধানসভা ভোটে বাম ও কংগ্রেসের জোটের ভরাডুবির পর সিপিএমের পলিটব্যুরো বলেছিল, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট দলের রাজনৈতিক লাইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না।
গত বছর মে-র ঘটনা। এক বছর কাটতে না কাটতেই ফের ‘রাজনৈতিক লাইন’ ভেঙে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানোর দাবি তুলল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। আজ থেকে দিল্লিতে তিন দিনের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শুরু হয়েছে। সূর্যকান্ত মিশ্রের নেতৃত্বে বঙ্গ-ব্রিগেড মূলত ৩টি দাবি তুলেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনে। এক, মে-তে রাজ্যের যে পুরসভাগুলিতে ভোট রয়েছে, সেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে চান তাঁরা। দুই, অগস্টে রাজ্যসভায় সীতরাম ইয়েচুরির মেয়াদ শেষ হলে, কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে ফের তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে পাঠাতে চান। তিন, আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট।
পলিটব্যুরোর এক নেতা বলেন, ‘‘বাংলার নেতারা যে এই দাবি তুলবেন, জানাই ছিল। এখন প্রশ্ন হল, এ কে গোপালন ভবনের সাড়া মেলে কি না!’’ এ কে গোপালন ভবনের অর্থ, প্রকাশ কারাট ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা। যাঁদের প্রশ্ন, কেন বারবার রাজনৈতিক লাইন ভেঙে পশ্চিমবঙ্গকে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ছাড়পত্র দেওয়া হবে? কেনই বা দলের প্রথা ভেঙে দু’বারের বেশি ইয়েচুরিকে রাজ্যসভায় পাঠানো হবে? বিশেষত ইয়েচুরি যখন দলের সাধারণ সম্পাদক, তখন তাঁর সংগঠনেই বেশি মন দেওয়া উচিত। কারাট শিবিরের এক নেতা বলেন, ‘‘আলিমুদ্দিনের নেতারা সাধারণ সম্পাদককে ফের রাজ্যসভায় পাঠানোর বিনিময়ে তাঁর থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ছাড়পত্র আদায় করে নিতে চাইছেন। এটা চলবে না।’’
বাংলার নেতারা অবশ্য কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ব্যাপারে অনড়। কারাট শিবিরের বক্তব্য, জোট না করে আলিমুদ্দিনের উচিত সংগঠন মজবুত করা ও নিজস্ব ভোট ব্যাঙ্ক বাড়ানো।
ইয়েচুরি-শিবির যদিও তা মানছে না। তাঁদের যুক্তি, সংগঠন মজবুত করার সময় চলে যাচ্ছে না। কিন্তু আশু রণকৌশল হিসেবে বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ জোট দরকার। তা বাস্তবায়িত করতেই ইয়েচুরিকে সংসদে দরকার।