শোকেও বিতণ্ডা, বাইরে প্রস্তাবপাঠ

বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা (বিএ) কমিটির বৈঠকে প্রথমে ঠিক হয়েছিল, এ দিন রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে অধিবেশন শুরু হবে। পর দিন বুধবার শোকপ্রস্তাব হয়ে অধিবেশন মুলতবি হয়ে যাবে। বাজেট পেশ হবে ১ ফেব্রুয়ারি। তার পরে ঠিক হয়, বাজেটের দিন সকালে শোকপ্রস্তাবের পরে তিন ঘণ্টা অধিবেশন মুলতবি রেখে বিকালে হবে বাজেট পেশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৪৩
Share:

মনোনিবেশ: বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর বক্তৃতা। উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

এত দিন বিরোধীদের অধিবেশন বয়কট বা নকল অধিবেশনের সাক্ষী থেকেছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। এ বার বিধানসভার অধিবেশন কক্ষের বাইরে শোকপ্রস্তাবও পাঠ করলেন বিরোধী কংগ্রেস এবং বাম বিধায়করা। সাম্প্রতিক ইতিহাসে যা নজিরবিহীন! বিরোধীদের অভিযোগ, বিধানসভার রীতি ভেঙে মঙ্গলবার যে ভাবে রাজ্যপালের ভাষণ এবং অন্য রিপোর্ট পেশের পরে সরকার শোকপ্রস্তাব নিয়েছে, তাতে প্রয়াতদের অসম্মান করা হয়েছে। ভূলুণ্ঠিত হয়েছে গণতন্ত্রের মর্যাদাও। তারই প্রতিবাদে কংগ্রেস এবং বাম বিধায়করা এ দিন বিধানসভা চত্বরে ভারতের সংবিধান প্রণেতা বি আর অম্বেডকরের মূর্তির সামনে পৃথক ভাবে শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন।

Advertisement

বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা (বিএ) কমিটির বৈঠকে প্রথমে ঠিক হয়েছিল, এ দিন রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে অধিবেশন শুরু হবে। পর দিন বুধবার শোকপ্রস্তাব হয়ে অধিবেশন মুলতবি হয়ে যাবে। বাজেট পেশ হবে ১ ফেব্রুয়ারি। তার পরে ঠিক হয়, বাজেটের দিন সকালে শোকপ্রস্তাবের পরে তিন ঘণ্টা অধিবেশন মুলতবি রেখে বিকালে হবে বাজেট পেশ। কিন্তু শনিবার বি এ কমিটি ডেকে সিদ্ধান্ত বদলে ঠিক হয়, রাজ্যপালের ভাষণের পরে এ দিনই শোকপ্রস্তাব হবে। সেইমতো রাজ্যপালের ভাষণের পরে এ দিন কিছু ক্ষণ সভা মুলতবি রেখে তার পরে শোকপ্রস্তাব আনা হয়। বিরোধী কংগ্রেস এবং বাম আপত্তি করলেও তাদের কথা শোনা হয়নি। তখন ওই দুই দলের বিধায়কেরা বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করে বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়ে শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন।

বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, ‘‘সংসদীয় গণতন্ত্রে রীতি হল, শোকপ্রস্তাবের পরে আর কোনও কাজ হয় না। এ ক্ষেত্রে বিধানসভার ভিতরে সব কাজ সেরে শোকপ্রস্তাব নেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রয়াত ব্যক্তিদের প্রতি অবমাননা করা হয়েছে। আমরা পাগলের সরকারের সঙ্গে পাগলামি করতে পারিনি! তাই আমরা বাইরে তাঁদের শ্রদ্ধা জানিয়েছি।’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরকার ভিতরে শোকপ্রস্তাব নিয়েছে মৃতদের অশ্রদ্ধা দেখানোর জন্য। আর আমরা বাইরে শোকপ্রস্তাব নিয়েছি তাঁদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য।’’ সরকারি শোকপ্রস্তাবের পাশাপাশি সিভিক পুলিশের মারে নিহত গৌরাঙ্গ দেবনাথ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী পর্ণা দত্তের প্রতিও শোক জানায় বিরোধীরা। সরকার পক্ষ অবশ্য বিরোধীদের যুক্তি খারিজ করে বলেছে, শোকপ্রস্তাবের পরে অধিবেশন মুলতবি করাই রীতি। তা-ই করা হয়েছে এ দিন।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন