বাগড়ি মার্কেটে ব্যবসার নামে ‘গুন্ডামি’কেই ছাড়পত্র! সরব বিমান-অধীর

লগ্নি আনার লক্ষ্যে ফ্রাঙ্কফুর্ট পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বাগড়ির মতো বাজারে ব্যবসায়ীরা ‘গুন্ডামি’ করেন। শৌচালয় পর্যন্ত ভাড়া দিয়ে দেওয়া হয়! তার পরে ঘিঞ্জি এলাকায় দমকল ঢুকতে পারে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৫২
Share:

ভস্মীভূত বাগড়ি মার্কেটে ব্যবসার নামে ‘গুন্ডামি’ চলছিল বলে বিদেশে গিয়ে যে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তার বিরুদ্ধে একযোগে সরব হল দুই বিরোধী দল সিপিএম ও কংগ্রেস। তাদের প্রশ্ন, সরকারের নানা দফতরের গাফিলতির দায় কে নেবে? আর ‘গুন্ডামি’ যদি হয়েই থাকে, তা হলে সরকার কী করছিল? বিপর্যয় মোকাবিলা-সহ নানা ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ‘লাগাতার ব্যর্থতা’ নিয়ে অভিযোগ জানাতে আজ, বুধবারই রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে দরবার করতে যাচ্ছে কংগ্রেস।

Advertisement

লগ্নি আনার লক্ষ্যে ফ্রাঙ্কফুর্ট পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বাগড়ির মতো বাজারে ব্যবসায়ীরা ‘গুন্ডামি’ করেন। শৌচালয় পর্যন্ত ভাড়া দিয়ে দেওয়া হয়! তার পরে ঘিঞ্জি এলাকায় দমকল ঢুকতে পারে না। তারই প্রেক্ষিতে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বিমান বসু মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলে দিলেন, গুন্ডামি হচ্ছে। কারা করল গুন্ডামি? নির্বাচনের আগে তিনিই তো বলেছিলেন, গুন্ডারা তাঁদের নিয়ন্ত্রণে! এখন কি হাতের গুন্ডারাই গুন্ডামি করল?’’ মাত্র ৪৭ দিন আগে বাগড়ি মার্কেটকে ছাড়পত্র দেওয়ার পরেও যে ভাবে আগুনে সব ছাই হয়ে গেল, তার জন্য পুরসভা ও দমকল দফতরের দিকে আঙুল তুলেছেন বিমানবাবু। দাবি করেছেন, ‘‘ছাড়পত্র দেওয়ার কাজে মেয়র ও মন্ত্রীর যদি ভূমিকা থাকে, তা হলে নৈতিক দায় নিয়ে তাঁর ইস্তফা দেওয়া উচিত!’’

বড়বাজা়র এলাকার দলীয় কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক, বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী-সহ সহকর্মীদের নিয়ে এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনিও বলেন, ‘‘জার্মানি থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলে দিলেন, গুন্ডামি হচ্ছে। দায় চাপল ব্যবসায়ীদের উপরে! সরকার তা হলে কী করছিল? কারা ছাড়পত্র দিল?’’ দমকল চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না দেখেও কেন সেনার সাহায্য নেওয়া হয়নি, তা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অধীরবাবু। রাজ্য সরকারের সার্বিক ব্যর্থতা নিয়ে আজ রাজ্যপালের কাছে যাওয়ার পরে ২৪ সেপ্টেম্বর কলকাতায় মিছিল ও সভা করবেন অধীরবাবুরা।

Advertisement

একই সুরে বিমানবাবুর বক্তব্য, ‘‘দমকলকর্মীরা ৬০-৭০ ঘণ্টা ধরে অসাধ্যসাধন করেছেন। কিন্তু জল নেই, আর জল দিয়ে এমন আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যায়ও না। বিমানবাহিনীর কপ্টার ফোম এবং গ্যাস দিয়ে আগুন নেভায়। অতীতে তা হয়েছে, বিদেশে তো আখছার হয়।’’ বড়বাজারে আগুন তো বাম আমলেও একাধিক বার লেগেছে? বিমানবাবু বলেন, ‘‘এক বারও অস্বীকার করিনি! আগুন তো লেগেছেই। কিন্তু সব দেখে ছাড়পত্র দেওয়ার ৪৭ দিনের মধ্যে ছ’তলা বাড়ি পুড়ে ছাই, এই রকম নজির আছে?’’ বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের সংযোজন, অগ্নিকাণ্ড নিয়ে তাঁরা ‘কূটকচালি’ করতে চান না। তাঁর কথায়, ‘‘বামফ্রন্ট আমলে আগুন লাগলেই তো কূটকচালি হত!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন