স্বপনের ‘বিতর্কিত’ অতীতের জেরে প্রশ্ন দলের বিরুদ্ধেও

স্বপনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আবাসিক এলাকায় স্টিলের ফার্নিচারের কারখানা চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। ২০০৫ সাল নাগাদ তাঁর আগের স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে মামলা চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৭
Share:

প্রতীকী ছবি

বধূ হত্যায় অভিযুক্ত প্রাক্তন সিপিএম নেতা স্বপন রায়ের বিরুদ্ধে আগেও এক মূক ও বধির নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং আগের পক্ষের স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল। শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যাচক্র কলোনিতে গত শনিবার রাতে স্বপনের দ্বিতীয় স্ত্রী ঝুমা রায় সরকারের (৩৬) হাত পা বাঁধা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রীর মাথায় ভারী কিছু দিয়ে বারি মেরে খুন করে থানায় গিয়ে তা জানিয়ে স্বপন আত্মসমর্পণ করেছেন। এলাকাবাসীর দাবি, বার বার অপরাধের অভিযোগ ওঠার পরেও ওয়ার্ডটি বরাবরই সিপিএমের দখলে। তাই স্বপন বারবার ছাড়ও পেয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁদের একাংশের দাবি, এবার ওই অভিযোগ থেকে বাঁচতেই শনিবার রাতে সিপিএম সমর্থক স্বপনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন ওই ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর প্রীতিকণা বিশ্বাস। সেই নালিশের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলাও রুজু করেছে পুলিশ।

Advertisement

স্বপনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আবাসিক এলাকায় স্টিলের ফার্নিচারের কারখানা চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। ২০০৫ সাল নাগাদ তাঁর আগের স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে মামলা চলছে। তারও আগে এলাকার এক মূক ও বধির নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠলেও তা থানা পর্যন্ত গড়ায়নি। এলাকাবাসীর দাবি, তখন বাম জমানা ছিল বলে তা সালিশি হয়েছিল মাত্র। ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পর্যবেক্ষক মানিক অরোরা বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘদিন থেকেই লোকটিকে নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি। কিন্তু সিপিএম তো বটেই এলাকার সকলেই জানেন, তিনি সিপিএমের কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ।’’ ওই তৃণমূল নেতার দাবি, জনরোষে পড়েই এখন কাউন্সিলর স্বপনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছে।

এলাকাবাসীর দাবি, কথায় কথায় ঝামেলা গোলমাল করা স্বপনের স্বভাব। ধুপগুড়ির বাসিন্দা ঝুমাকে প্রায় দু’বছর হল বিয়ে করার পর তাঁকে নিয়মিত ভাবে অত্যাচার করত বলে অভিযোগ পড়শিদের। কয়েকমাস আগে তাঁকে মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়েছিল বলে দাবি সকলের। তখনই এলাকাবাসীর ক্ষোভে মুচলেকা দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে পাড়া ছাড়েন তিনি। কিন্তু এ বছর লোকসভা নির্বাচন আসতেই সিপিএম প্রার্থীর এজেন্ট হয়ে এলাকায় ফেরে। পরে কাউন্সিলর প্রীতিকণা বিশ্বাসের বাড়িতে তাঁকে প্রায় রোজই দেখা যেত। স্থানীয় ক্লাবের সদস্যদের আপত্তির পরেও মাত্র দু’সপ্তাহ আগে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছিল স্বপন। তার পরেই এই ঘটনা।

Advertisement

অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন সিপিএম কাউন্সিলর প্রীতিকণা বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ‘‘এরকম ঘটনা কেউ সমর্থন করবে না। আমি তো নয়ই। আগের বারও স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগের সময় আমি মহিলা সমিতি থেকে মিছিল করেছিলাম। এবারও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমিই দিয়েছি। তাহলে আমি বা আমার দল কোথায় তাঁকে সমর্থন করল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন