CPM Protest

সন্দেশখালি নিয়ে জেলায় জেলায় পথে বামেরা, সঙ্গী কোথাও কংগ্রেসও, পুলিশের সঙ্গে সংঘাত পাঁচ এলাকায়

বাম বিক্ষোভে উত্তাল বহরমপুরও। টেক্সটাইল মোড়ে জ্বালানো হয়েছে টায়ার। পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার অভিযোগ করেছেন প্রতিবাদীরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৫৫
Share:

বাঁকুড়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘাত সিপিএম সমর্থকদের। — নিজস্ব চিত্র।

সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদে জেলায় জেলায় পথে নামল সিপিএম। পাশাপাশি, তাদের তরফে জানানো হয়েছে, দিল্লিতে কৃষকদের আন্দোলনে সংহতি জানাতেও এই পদক্ষেপ। এই কর্মসূচি ঘিরে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতের অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন জেলায়। পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার অভিযোগ তুলেছেন প্রতিবাদীরা। পাল্টা পুলিশকে ইট ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে। কোথাও কোথাও বামেদের সঙ্গে রয়েছে কংগ্রেস।

Advertisement

মেদিনীপুরে ‘আইন অমান্য’ কর্মসূচি চলছে বামেদের। বারুইপুরে এই কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির অভিযোগ উঠেছে। বাম বিক্ষোভে উত্তাল বহরমপুরও। টেক্সটাইল মোড়ে জ্বালানো হয়েছে টায়ার। পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার অভিযোগ করেছেন প্রতিবাদীরা। আসানসোলে বাম এবং কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠন যৌথ ভাবে পথে নেমে প্রতিবাদ করে। আহত হয়েছেন কয়েকজন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিপিএম নেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। প্রতিবাদের আঁচ পড়েছে বাঁকুড়াতেও। পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরেও ধুন্ধুমার কাণ্ড। সেখানে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে প্রতিবাদ জানান তাঁরা।

বহরমপুর টেক্সটাইল কলেজ মোড়ে সিপিএমের ক্ষেতমজুর, শ্রমিকদের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ছোট সভা শেষে উপস্থিত কর্মীরা মিছিল করে এগিয়ে যান। রাস্তায় লোহার ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রেখেছিল পুলিশ। প্রতিবাদীরা সেই ব্যারিকেড টপকাতে গেলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। আহত হন বেশ কয়েক জন সিপিএম কর্মী। ঘটনার পর পরই পুলিশ ধরপাকড় শুরু করে। বেশ কয়েক জনকে আটক করে তুলে নিয়ে যায়। মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের দাবি আদায়ের প্রশ্নে যে কোনও আন্দোলনে আক্রমণ চালাচ্ছে তৃণমূলী পুলিশ। মানুষ গণপ্রতিরোধের মধ্যে দিয়ে তাঁদের ন্যায্য অধিকার রাস্তাতেই বুঝে নেবে।’’

Advertisement

মেদিনীপুরে পুলিশের বিরুদ্ধে বিনা প্ররোচনায় লাঠিচার্জের অভিযোগ এনেছেন বাম কর্মীরা। পাল্টা পুলিশকে মারধরের অভিযোগও উঠেছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদ মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হল থেকে বামেদের একটি বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। ডিএম কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করে বামেরা। সে সময় পুলিশ বাধা দিলে প্রথমে বচসা এবং পরে ধস্তাধস্তি হয় দু’পক্ষের মধ্যে। কিছু ক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঠে নামে বিশাল পুলিশবাহিনী। ঘটনাস্থলে ছিলেন অতিরিক্ত এসপি-সহ কয়েক জন ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিক। পুলিশের সঙ্গে সংঘাতের পরে বেশ কিছু ক্ষণের জন্য কালেক্টরেট মোড়ে পথ অবরোধ করে বামেরা। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।

বারুইপুরেও মঙ্গলবার ছড়িয়েছে উত্তেজনা। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির অভিযোগে গ্রেফতার হন সিপিএম নেতা তুষার ঘোষ। বারুইপুরে কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন তিনিই। এই ঘটনার পর এসডিও অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সিপিএম কর্মীরা।

আসানসোলেও পথে নেমেছে বাম এবং কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের সদস্যেরা। তাঁদের ‘আইন অমান্য’ এবং ‘জেল ভরো’ আন্দোলন ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। জিটি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান প্রতিবাদীরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বামনেত্রী মিনাক্ষী, প্রাক্তন সাংসদ তথা সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরী, সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়, তাপস কবি-সহ শীর্ষনেতারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। বেশ কিছু ক্ষণ পথ অবরোধের পর আসানসোলের মহকুমাশাসকের অফিস ঘেরাও করেন প্রতিবাদীরা। কয়েক জন বাম নেতা ও কর্মীকে আটক করে প্রিজ়ন ভ্যানে তোলে পুলিশ। কিছু ক্ষণ পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পর সভা করেন তাঁরা।

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে এই অভিযোগ তুলে দুর্গাপুর নগর নিগম সংলগ্ন চারমাথা মোড় অবরোধ করে সিপিএম এবং কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা। টায়ার জ্বালিয়ে আন্দোলনে সামিল হন তাঁরা। নেতৃত্ব দেন সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার ও কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠনের জেলা নেতৃত্বেরা। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় ধস্তাধস্তি চলে। অবরোধের জেরে ব্যাহত হয় যান চলাচল। পুলিশের হস্তক্ষেপে ওঠে অবরোধ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন