দীর্ঘ ৩৭ বছর পরে ফের সিপিএমের প্লেনাম বসছে পশ্চিমবঙ্গে। শেষ বার সিপিএমের সাংগঠনিক প্লেনাম হয়েছিল সালকিয়ায় ১৯৭৮ সালে। এ বারের প্লেনাম কলকাতায় হবে বলে ঠিক হয়েছিল আগেই। শেষ পর্যন্ত সেই প্লেনামের দিনক্ষণও ৩৭ বছর আগেকার বিশেষ সম্মেলনের সঙ্গে মিলিয়ে দিল সিপিএম! সালকিয়ার প্লেনাম হয়েছিল ২৭ থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৭৮। কলকাতার প্লেনামও শুরু হবে ২৭-৩০ ডিসেম্বর।
বিশাখাপত্তনমে কয়েক মাস আগের পার্টি কংগ্রেসেই ঠিক হয়েছিল, দলের সাংগঠনিক অবস্থা পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় রদবদলের জন্য কলকাতায় প্লেনাম হবে নভেম্বরে। তবে দিল্লিতে রবিবার শেষ হওয়া সিপিএমের তিন দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সম্মেলনের সময় আর একটু পিছিয়ে দেওয়া হবে। বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, নভেম্বরে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন থাকবে। তা ছাড়া, বিহারের বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা অক্টোবর-নভেম্বরে। বিহারের ভোটের ফল অদূর ভবিষ্যতে জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে বলেই সিপিএম নেতৃত্বের ধারণা। বর্ষশেষে প্লেনাম হলে বিহারের পরিণাম দেখে নিয়েই আলোচনায় বসা যেতে পারে। দলের এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘প্রাথমিক ভাবে নভেম্বরের সঙ্গে ডিসেম্বরকেও আমরা সম্ভাব্য সময় হিসাবে মাথায় রেখেছিলাম।’’ ঠিক হয়েছে, কলকাতা জেলা কার্যালয় প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনেই হবে প্লেনাম।
সিপিএমের জন্য দুই গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ও কেরলে বিধানসভা নির্বাচন আগামী বছর। তার আগে দু’রাজ্যেই সংগঠনের হাল শোধরাতে চান সীতারাম ইয়েচুরিরা। কেরলে যেমন বারেবারেই গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব মাথা চাড়া দিচ্ছে, তেমনই আবার বাংলায় সংগঠনের বহু স্তরে নিষ্ক্রিয়তার সমস্যা কাটানো যাচ্ছে না। এই সব সমস্যা মোকাবিলার পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মকে সংগঠনের সামনের সারিতে নিয়ে আসার লক্ষ্যও প্লেনাম থেকে বাস্তবায়িত করতে চান ইয়েচুরি। আপাতত পলিটব্যুরোর তরফে সব রাজ্যকে দীর্ঘ প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়েছে, যা আবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে নিচু তলায়। রাজ্যগুলির হাত থেকে উত্তর নিয়ে আবার আলোচনায় বসবে কেন্দ্রীয় কমিটি। এক পলিটব্যুরো সদস্যের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যগুলির কাছ থেকে তথ্য নিয়ে অক্টোবরে কেন্দ্রীয় কমিটি প্লেনামের জন্য একটি খসড়া রিপোর্ট তৈরি করবে। সেটা আবার রাজ্যে রাজ্যে পাঠানো হবে মতামতের জন্য। খসড়ার সঙ্গেই সেই সব সংশোধনী পেশ করা হবে ডিসেম্বরে কলকাতার প্লেনামে।’’