নজর তারুণ্যে, সংগঠন ঢেলে সাজাবে সিপিএম

সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে রাজ্য ও জেলা স্তরের সাংগঠনিক হাল পর্যালোচনা করতে গিয়ে বিপুল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৯ ০৩:৫৭
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

হেরে হেরে পিঠ ঠেকেছে দেওয়ালে। কোণঠাসা হয়েই এ বার সংগঠনে বড়সড় রদবদল আনার মরিয়া চেষ্টায় নামছে সিপিএম। তাদের লক্ষ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তুলনায় তরুণ সংগঠনকে নিয়ে লড়াইয়ে নামা।

Advertisement

সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে রাজ্য ও জেলা স্তরের সাংগঠনিক হাল পর্যালোচনা করতে গিয়ে বিপুল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁদের মতে, এ বারের লোকসভা ভোটে যে বাম সমর্থকদের ভোট বিজেপি বা তৃণমূলে গিয়েছে, তাঁরা পাকাপাকি ভাবে মুখ ফিরিয়েছেন— এমন নয়। কিন্তু তাঁদের আবার বাম দিকে ফেরাতে গেলে যে পরিশ্রম দরকার, তা করার মতো সংগঠন কোথায়? সেই কারণেই সাংগঠনিক পুনর্গঠনের দাওয়াই প্রয়োগের সিদ্ধান্ত। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী থেকে শুরু করে জেলা কমিটি হয়ে একেবারে শাখা স্তর পর্যন্ত বেশ কিছু রদবদলের চেষ্টা হবে। সংগঠন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কী করণীয়, তার জন্য রাজ্য কমিটির সদস্যদের কাছে আগামী ১৫ অগস্টের মধ্যে লিখিত মতামত চেয়েছে আলিমুদ্দিন।

দলীয় সূত্রের খবর, বিভিন্ন স্তরের কমিটির গড় বয়স আরও কমানো ছাড়া যে উপায় নেই, সেই বার্তাই এ দিন রাজ্য কমিটির বৈঠকে জবাবি ভাষণে স্পষ্ট করে দিয়েছেন ইয়েচুরি। তাঁর যুক্তি, দেশের জনসংখ্যার ৭০%-এর এখন গড় বয়স চল্লিশের আশেপাশে। অথচ সিপিএমের নেতা-কর্মীদের ৭০%-এরই গড় বয়স ষাটের উপরে। সামাজিক মাধ্যমকে যথাযথ ব্যবহার থেকে শুরু করে এখনকার যুগে যে সব উপায়ে সক্রিয় হতে হয়, তার সঙ্গে তাল রেখে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হলে তরুণতর সংগঠন জরুরি। ইয়েচুরি বৈঠকে বলেছেন, বয়স ৬০ ছাড়ালে নতুন কাউকে রাজ্য কমিটিতে নেওয়া হবে না— এই নিয়ম চালু করেছিল বাংলাই। এখন অন্যান্য রাজ্যের সিপিএম এই নীতি মেনে চলছে। বাংলাকে এখন আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে পদক্ষেপ করতে হবে। আগামী বিধানসভা ভোটের আগে হাতে যা সময় আছে, তাকে সংগঠন ঢেলে সাজার কাজে লাগাতে বলেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক।

Advertisement

শাখা স্তর থেকে সাংগঠনিক সক্রিয়তার যে অবস্থা পর্যালোচনা রিপোর্টে ধরা পড়েছে, তা ভয়াবহ বলেই বৈঠকে মন্তব্য করেছেন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু। জবাবি ভাষণে তাঁর সাফ বার্তা, অদক্ষতা, অযোগ্যতা বা অক্ষমতা আড়াল করার আর কোনও চেষ্টা চলবে না। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী থেকে নিচু তলা পর্যন্ত প্রয়োজনীয় পুনর্গঠনের কাজ দ্রুত সেরে ফেলতে হবে। দলের অন্দরের প্রাথমিক আলোচনায় ঠিক হয়েছে, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর কয়েক জন সদস্যকে অব্যাহতি দিয়েই গোড়ায় সংগঠনকে প্রয়োজনীয় বার্তা দিতে চায় আলিমুদ্দিন।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূলের মোকাবিলা করে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত সংগঠন থাকা জরুরি। রাতারাতি সব কিছু বদলে ফেলা সম্ভব নয়। তবে কমিটি ধরে ধরে প্রয়োজনীয় রদবদল যা করার, করতে হবে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement