গত পাঁচ দিন ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে চুঁচুড়ার শ্মশানে। —নিজস্ব চিত্র।
গত ২১ মে রাতে কয়েক সেকেন্ডের ঝড়ে শ্মশানের ধারে একটি গাছ ভেঙে পড়ে পাঁচিলে। উপড়ে যায় বিদ্যুতের খুঁটি। ভাঙা পাঁচিলে বিদ্যুতের ছেঁড়া তার পড়ে লন্ডভন্ড দশা হুগলির চুঁচুড়ার শ্যামবাবুর ঘাট মহাশ্মশানে। তার পর পাঁচ দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি। ফলত পাঁচ দিন ধরে বন্ধ চুঁচুড়ার একমাত্র শ্মশানঘাটের বৈদ্যুতিক চুল্লি। দেহ সৎকার করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন চুঁচুড়া পুরসভার ত্রিশটি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। শুধু পুরসভাই নয়, কোদালিয়া-১ এবং কোদালিয়া-২ পঞ্চায়েত থেকে ব্যান্ডেল, দেবানন্দপুর, সুগন্ধা গ্রাম পঞ্চায়েত-সহ আশপাশের প্রায় দশটি পঞ্চায়েত এলাকার কেউ মারা গেলে সৎকারের জন্য নিয়ে আসা হয় ওই শ্মশানেই। কিন্তু এখন দাহ করতে হয় ত্রিবেণী, নয়তো চন্দননগর শ্মশানঘাটে যেতে হচ্ছে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘‘এখানে মরেও শান্তি নেই।’’ স্থানীয় বিধায়ক অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে।
শ্যামবাবুর ঘাট শ্মশানটি গঙ্গার পারেই। পাঁচ দিন আগে ঝড়ে সেখানে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে। ঘরের চাল উড়ে যায়। ব্যাহত হয় বিদ্যুৎ পরিষেবা। সেই দিন রাত থেকেই শ্মশানঘাট বন্ধ রয়েছে। সোমবার পর্যন্ত চালু হয়নি শ্মশান। কিন্তু ত্রিবেণী বা চন্দননগরে দাহ করলে মৃত্যুর শংসাপত্র নিতে যেতে হয় শ্যামবাবুর ঘাটেই। চুঁচুড়া শ্মশানঘাটে রয়েছে পিস হ্যাভেন। যেখানে ‘ডিপ ফ্রিজ়ার’-এ চারটি দেহ সংরক্ষণ করে রাখা যায়। সেই পরিষেবাও বন্ধ। চুঁচুড়া পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের পুর পারিষদ জয়দেব অধিকারী বলেন, ‘‘ঝড়ে প্রায় ৩৬টি গাছ ভেঙেছিল। সেগুলো কেটে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ১৮টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছিল। বিদ্যুৎ দফতর কাজ করছে। তবে কেন বৈদ্যুতিক চুল্লির বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয়নি, সেটা বলতে পারব না। মহকুমা শাসকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা করা হবে।’’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘শ্মশানঘাটে জেনারেটর বসানোর বিষয়ে কেএমডিএ বা সুডা সাহায্য করতে পারে। তবে এখনই কিছু ভাবনা নেই।’’
অন্য দিকে, চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার জানাচ্ছেন, তিনি সমস্যার সমাধানে চেষ্টা করছেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘প্রাকৃতিক বিপর্যয় হতেই পারে। কিন্তু তার জন্য পরিষেবা বন্ধ থাকবে কেন? এই রকম পরিস্থিতি আগে হয়নি। ওখানে গাছ পড়েছে। খুঁটি ভেঙেছে। তার পরেও শ্মশানঘাট চালু করা দরকার ছিল। পাঁচ দিন হয়ে গেল, কোন দাহ সৎকারের কাজ করা যাচ্ছে না?’’ বিধায়কের সংযোজন, ‘‘আমি ঠিক করেছি, আগামী অর্থবর্ষে আমার বিধায়ক তহবিলের টাকা থেকে শ্যামবাবুর ঘাটে অত্যাধুনিক জেনারেটর বসাব। যার ফলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হলেও শ্মশানঘাট বন্ধ থাকবে না।’’