সায়রে: জমজমাট দিঘার সমুদ্র সৈকত। নিজস্ব চিত্র
শুক্রবার থেকে টানা ছুটি। তাই ঠাঁই নাই দিঘায়। জমজমাট দিঘার নিরাপত্তায় নিয়ে বাড়তি সতর্ক প্রশাসন। আবার তার মধ্যেই সুযোগ বুঝে দিঘা জুড়ে এখন সক্রিয় হয়ে উঠেছে দালালচক্র।
১৪ এপ্রিল শুক্রবার গুড ফ্রাই-ডে, ১৫ এপ্রিল শনিবার বাংলা নববর্ষ— সব মিলিয়ে সপ্তাহান্তে বেড়ানোর আমেজ। তাই দিঘার বেশিরভাগ হোটেলই বোর্ড ঝুলিয়েছে— ‘নো-রুম’। তবে পকেটের জোর থাকলে পাওয়াও যাচ্ছে সে সব ঘরের চাবি। আর তা নিয়ে সরব হয়েছেন পর্যটকরা।
দুর্গাপুর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে দিঘা বেড়াতে এসেছেন সুমন কর্মকার। ওল্ড দিঘার নেতাজি মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, “অনেকগুলো হোটেল ঘুরলাম। এতো চড়া দাম আগে কখনও দিঘাতে শুনিনি।’’ আবার কোচবিহার থেকে সপরিবারে বেড়াতে এসেছে অমিত সরকার। তিনি জানালেন, “এত ভিড় হবে ভাবিনি। জানলে আগে থেকে হোটেল বুক করে আসতাম। নিউ দিঘায় একটা বেসরকারি হোটেল সুযোগ বুঝে খুব বেশি ভাড়া চাইছে।’’
পর্যটকদের অভিযোগ মানতে নারাজ দিঘার হোটেল মালিকরা। দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কোনও পর্যটক অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে মাসের মাঝে এমন জনজোয়ারে খুশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ও ট্রাভেল এজেন্টরা। ওল্ড দিঘার ঝিনুক ব্যবসায়ী তপন আদক বলেন, “ওড়িশার চন্দনেশ্বরে চলছে গাজন। তাই এমনিতেই ভিড়। তার উপর টানা ছুটি। বিক্রি ভালোই হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: নিজে জয়ী, আত্মরক্ষার পাঠ দিচ্ছেন অন্যদের
জমজমাট দিঘার নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “পাশেই ওড়িশা বর্ডার। তাই যানবাহনের উপর বিশেষ নজরদারি চলছে। সারা দিঘার নিরাপত্তা আরো আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। হোটেলগুলোতে ভিনরাজ্য বা বিদেশিদের বিষয়ে খোঁজ খবর করছে পুলিশ।’’ তবে এরই মধ্যে ঘটে গিয়েছে দুর্ঘটনা। বৃহস্পতিবার সমুদ্রে তলিয়ে মৃত্যু হয়েছিল বছর বাইশের ডাক্তারি ছাত্র সুজয় দে-র। তাঁর দেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টা না কাটতেই ফের তলিয়ে গেলেন এক পর্যটক। তবে তাঁকে উদ্ধার করা গিয়েছে। শনিবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ তলিয়ে যান দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্দেশখালির জগদীশ দাস। নুলিয়ারা তাঁকে উদ্ধার করেন। পুলিশের দাবি, ওই ব্যক্তি মদ্যপ ছিলেন।
দিঘা কোস্টাল পুলিশের দাবি, হাতে গোনা কয়েকজন নুলিয়া ও কিছু পুলিশ এত পর্যটকের উপর নজর রাখতে পারছে না। তাই কেউ কেউ সমুদ্রের গভীরে চলে যাচ্ছেন।