পুরনো ছকে লটারির টোপ আর নয়। এ বার বিপদের হাতছানি আসছে বন্ধুর ভেক ধরে!
সম্প্রতি অনেকেই মোবাইলে এসএমএস পাচ্ছেন যাতে লেখা থাকছে, গ্রাহকের এক বন্ধু তাঁর অ্যাকাউন্টে ১০০০ বা ২০০০ টাকা জমা করেছেন। সেই টাকা পেতে হলে একটি অ্যাপের ‘লিঙ্ক’ দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের দাবি, সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই বিপদ ঘনিয়ে আসবে। কারণ, লিঙ্কে ক্লিক করা মাত্র গ্রাহকের মোবাইলের সব তথ্য চলে যাবে হ্যাকারদের হাতে।
লালবাজারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এই এসএমএস নিয়ে কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে। তা খতিয়ে দেখছে সাইবার অপরাধ থানা। এর পিছনে ভিন্ দেশি জালিয়াতেরা রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীরা দেখেছেন, ওই এসএমএসগুলি কোনও ফোন নম্বর থেকে আসছে না। ইন্টারনেট ব্যবহার করে কলসেন্টারের ধাঁচে একসঙ্গে রাশি-রাশি মেসেজ পাঠানো হচ্ছে। মেসেজে এমন কিছু নাম বলা হচ্ছে, যা খুবই প্রচলিত। তার ফলে এক
সঙ্গে ১০০ জনকে সেই মেসেজ পাঠালে, তা কারও না কারও বন্ধুর নামের সঙ্গে মিলবেই। টাকার লোভে পা দিয়ে সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই বিপদে পড়বেন তিনি।
সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, ইদানীং মানুষের বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার এবং বিভিন্ন শপিং সংস্থার ওয়ালেটে কেনাকাটার বিনিময়ে পাওয়া টাকা বা পয়েন্ট লেনদেনের অভ্যাস বেড়েছে। তার ফলে এই ধরনের মেসেজের ফাঁদে পা দেওয়ার আশঙ্কাও বেশি। পুলিশের একাংশের মতে, লটারির ফাঁদ বহুচর্চিত হওয়ায় মানুষের সচেতনতা বেড়েছে। কিন্তু এই ধরনের ফাঁদ এখনও বহুল প্রচারিত নয়। তা ছাড়া, লটারিতে ফোন নম্বর বা ই-মেল ব্যবহার করতে হয়। সে ক্ষেত্রে ধরা পড়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু অ্যাপের মাধ্যমে করলে আর ধরা পড়ার ভয় থাকে না।
সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহারের সময়ে ব্যবহারকারীকে ফোনের ছবি, কললিস্ট ব্যবহারের অনুমোদন দিতে হয়। অজানা অ্যাপ ব্যবহারে তাই আশঙ্কা থাকেই। সেটাকেই হাতিয়ার করছে অপরাধীরা।’’ সম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘গুগল’-এর জারি করা সতর্কতাতেও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের প্রসঙ্গ এসেছিল। কিন্তু এই জালিয়াতির পিছনে লুকিয়ে থাকা অপরাধীদের খোঁজ মিলেছে কি, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে।
লালবাজার সূত্রের খবর, তদন্ত শুরু হয়েছে। কিছু সূত্র মিলেছে। তবে বহু সময়েই সাইবার জালিয়াতেরা ভিন্ দেশে বসে কাজ চালায়। আবার এ দেশে বসে কাজ করলেও প্রক্সি সার্ভার ব্যবহার করে ভিন্ দেশের ঠিকানা ভাঁড়িয়ে নেয়। ফলে এদের চিহ্নিত করতে সময় লাগবে।