Cyclone Amphan

আমপানের প্রভাব করোনা পরীক্ষায়

আমপানের ধাক্কায় এক দিনে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৮৭২০ থেকে অর্ধেকেরও কম হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২০ ০৪:৩১
Share:

সামাজিক দূরত্বের বিধি শিকেয় তুলে ত্রাণশিবিরেই মোবাইল গেমে মত্ত কিশোর-কিশোরীরা। ছবি: পিটিআই

চার পাতার করোনা-তথ্যে তিনটি তারা চিহ্ন। বৃহস্পতিবারের করোনা বুলেটিনে সেই চিহ্নগুলিই বলে দিচ্ছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কোভিডের সঙ্গে লড়াইয়ে কী প্রভাব ফেলেছে।

Advertisement

এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে নমুনা পরীক্ষা সংক্রান্ত তথ্য, জেলাভিত্তিক আক্রান্তের পরিসংখ্যান এবং কোন ল্যাবে কত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, সেখানে তিনটি তারা চিহ্ন রয়েছে। নমুনা পরীক্ষা সংক্রান্ত তথ্য প্রসঙ্গে বুলেটিনে জানানো হয়েছে, আমপানের কারণে বুধবার কোনও হিসেব নেওয়া যায়নি। আক্রান্তের পরিসংখ্যানের পাতায় এ দিন ‘অজানা জেলা’ নামে নতুন শিরোনাম যুক্ত হয়েছে। বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে যে অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার জন্য ১১ জন করোনা পজ়িটিভ রোগী কোন জেলার বাসিন্দা তা চিহ্নিত করা যায়নি।

আমপানের ধাক্কায় এক দিনে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৮৭২০ থেকে অর্ধেকেরও কম হয়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪২৪২টি। তারা চিহ্ন দিয়ে বুলেটিনে লেখা হয়েছে, ঝড়ের জন্য বুধবার বিকেলের পরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে বেশির ভাগ ল্যাব বন্ধ ছিল। সে জন্য নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা অর্ধেকের কম।

Advertisement

এ দিন বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ৪২৪২টি নমুনা পরীক্ষা করে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৯৪ জন। আরও ছ’জনের মৃত্যু হওয়ায় করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮৭। কো-মর্বিডিটির কারণে ৭২ জনের মৃত্যুকে নিয়ে রাজ্যে করোনা পজ়িটিভ মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৫৯।

স্বাস্থ্য দফতরের একাংশের বক্তব্য, নেট বিপর্যয়, ফোন বিভ্রাটের পাশাপাশি বহু জায়গায় প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা কাজে যোগ দিতে পারেননি। বিদ্যুৎ, ফোন, নেট বিপর্যয়ের কারণে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ও মুশকিল আসান হয়নি। স্বাস্থ্যকর্তাদের পর্যবেক্ষণ, জেলা স্বাস্থ্য দফতরগুলির মধ্যে সমন্বয়ের ভিত্তিতে করোনার সঙ্গে লড়াই করছিল স্বাস্থ্য ভবন। আমপানের জন্য সেই সমন্বয়ে ছন্দপতন ঘটেছে।

স্বাস্থ্য ভবনের খবর, রাস্তায় গাছ পড়ে থাকায় একাধিক জেলা থেকে কলকাতার ল্যাবগুলিতে এ দিন নমুনা আনতে সমস্যা হয়েছে। নাইসেডের অধিকর্ত্রী শান্তা দত্ত জানান, কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থার অনেক কর্মীকে বাড়ি থেকে আনা যায়নি। রাস্তায় গাছ পড়ে থাকায় নমুনা বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্স অনেক জায়গায় আটকে গিয়েছে। কোথাও হেঁটে নমুনা পৌঁছে দিয়েছেন জেলা হাসপাতালের কর্মীরা।

বেসরকারি ক্ষেত্রে ডি এল প্যাথ ল্যাবে কাজ বন্ধ থাকায় বেসরকারি হাসপাতালগুলি সমস্যায় পড়েছে। তার কারণও আমপান। আনন্দপুরের বেসরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, ওই ল্যাব নমুনা ফিরিয়ে দেওয়ায় ৩৮ জন নার্স-সহ বেশ কিছু রোগীর নমুনা পরীক্ষা করানো যায়নি। সরকারি হাসপাতালেরও বড় সংখ্যক নমুনা ওই ল্যাবে পরীক্ষা হয়। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়ার মতো রেড জ়োনে নমুনা পরীক্ষায় ব্যাঘাত ঘটায় সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করছে চিকিৎসক সংগঠনগুলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন