রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলায় প্রভাব পড়লেও কলকাতায় পড়ল না প্রত্যক্ষ প্রভাব। কলকাতার পাশ কাটিয়ে আরামবাগ-কাটোয়া হয়ে নদিয়া-মুর্শিদাবাদ দিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছল ফণী।
মূলত দুই মেদিনীপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাংশে প্রভাব পড়ে ফণীর।
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আগে থেকেই নিচু এলাকা ও উপকূলীয় অঞ্চলগুলি থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। দিঘায় সমুদ্র উত্তাল ছিল শুক্রবার সারা দিনই।
ফণীর প্রভাবে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া জেলা শুক্রবার রাতভর বৃষ্টি হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় জানান, কিছু বিদ্যুতের সাবস্টেশনে ক্ষতি হয়েছে ফণীর প্রভাবে।
দিঘা ছাড়াও গঙ্গাসাগর এলাকায় ফণীর প্রভাবে বেশ কিছু দোকানপাট ক্ষতির মুখে পড়ে। মন্দারমণি, শঙ্করপুর, বকখালি, সাগরদ্বীপ এলাকাতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
নামখানা স্টেশনে ঝড়ের দাপটে চাল উড়ে যায়। ডায়মন্ড হারবার স্টেশনেও ভাঙে সাইন বোর্ড, উপড়ে যায় বিদ্যুতের খুঁটি। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামতের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সন্দেশখালি ও ধামাখালিতে বেশ কিছু বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। উপড়ে যায় গাছও।
হলদিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল শুক্রবার ফণী আছড়ে পড়ার পর।
পশ্চিম মেদিনীপুরের পিয়াশালার কুন্দরীশোল গ্রামে বাজ পড়ে ভৈরব সাউ নামে ১২ বছরের এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরে চারটি দোকান ভেঙে পড়ে। রাজ্যে মোট ১২টি মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। ৮২৫টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খড়্গপুরের রামনগরে মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ে। ঝাড়গ্রামে ২০টি কাঁচা বাড়ি আংশিক ভেঙে পড়েছে। তবে সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি।
ঘণ্টায় প্রায় ৯০ কিলোমিটার বেগে খড়্গপুরের বুকে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই ফণী তাণ্ডব চালায়। তার পর কলকাতার পাশ কাটিয়ে ক্রমশ হুগলির আরামবাগ, বর্ধমানের কাটোয়া হয়ে নদিয়ায় প্রবেশ করেছিল। পরে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ফণী।