উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। জারি হয়েছে জরুরি সতর্কতা। —নিজস্ব চিত্র।
ঘূর্ণিঝড়ের তকমা হারিয়েছে তিতলি। তবে, ঘূর্ণিঝড় থেকে সে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতেই তার ঝাপটায় উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বেশ কয়েক জায়গায় হয়েছে প্রবল ঝড়। সেই ঝড়েই লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে খড়্গপুরের চারটি গ্রাম। দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক জনের।
সকাল থেকেই ঝাড়গ্রাম এবং দুই মেদিনীপুরে ঘণ্টায় ৫৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। তবে খড়্গপুরের কাছে সেই হাওয়ার গতিবেগ ছিল অনেক বেশি। ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার। ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে চারটি গ্রাম।
ওই ঝড়ের সময় ধুলিয়াপোতায় একটি কারখানার দেওয়ালের আড়ালে আশ্রয় নিয়েছিলেন কপোতিয়া গ্রামের বাসিন্দা ইলিয়াস মল্লিক (৩৮)। কিন্তু, ঝড়ের দাপটে সেই দেওয়াল ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন।
দেখুন অ্যানিমেশনে প্রাকৃতির দুর্যোগ
আরও পড়ুন: নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে তিতলি, আগামী দু’দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা রাজ্যে
হাওয়ার দাপটে ওই তিন জেলার বিভিন্ন জায়গায় কাঁচা বাড়ি পড়ে গিয়েছে। রাস্তার উপরে ভেঙে পড়ে গাছ। ঝাড়গ্রামের পাঁচ নম্বর রাজ্য সড়কের উপরে জিতুশোল এলাকায় গাছ পড়়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে সাঁকরাইল ব্লকের রোহিনী নতুন বাজার সর্বজনীন মণ্ডপের প্যান্ডেল উড়ে গিয়েছে। খড়্গপুরের কলাইকুণ্ডা এলাকাতেও গাছ ভেঙে পড়েছে। শালবনীতেও ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে ভেঙে পড়েছে বেশ কয়েকটি কাঁচা বাড়ি। আরও অনেক জায়গাতেই ভেঙে গিয়েছে পুজো প্যান্ডেল।
পাশাপাশি, উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। দিঘা, তাজপুর এবং বকখালিতে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে বারণ করা হয়েছে। সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদেরও।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলাতে প্রচুর বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। শনিবার অর্থাৎ চতুর্থী পর্যন্ত দুর্যোগের হাত থেকে রেহাই মিলবে না বলে জানানো হয়েছে। এই দুই দিন কোথাও কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে।
আরও পড়ুন: পুজোয় মেঘমুক্ত আকাশ, আশ্বাস আবহাওয়া দফতরের
পঞ্চমীর সকাল থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে নিম্নচাপ ধীরে ধীরে সরে যাবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। ওই দিন কোথাও কোথাও ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হলেও, ষঠীর সকাল থেকে আকাশ পরিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনা। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা জি কে দাস বলেন, “তিতলি শক্তি হারালেও, ঝোড়ো হাওয়া থাকবে। উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে হাওয়া চলবে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে কলকাতাতেও বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। শনিবার সকাল থেকে কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনাতে ভালই বৃষ্টি হবে।” হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, গভীর নিম্নচাপের ফলে দক্ষিণবঙ্গের বর্ধমান, বীরভূম, হুগলি, নদিয়াতে বৃষ্টি হবে। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গের মালদহ এবং দুই দিনাজপুরেও চলবে বৃষ্টি।
(অ্যানিমেশন: শৌভিক দেবনাথ)
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খবর এবং বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলায় খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের রাজ্য বিভাগে।)