আকাশছোঁয়া দর, হেঁশেলে হাহাকার

সেই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে, যেটুকু খাবার আসছে, তা আগে মোর্চার নেতাদের ঘরেই পৌঁছচ্ছে। শুক্রবার দার্জিলিং সদরে নারী মোর্চার মিছিলে যোগ দিতে যান বাদামতাম, পানদাম, কাকঝোর বস্তি সহ নানা গ্রামের মহিলারা।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪২
Share:

একে তো হেঁশেল ভরে রাখার সুযোগ না দিয়েই বন্‌ধ ডাকা হয়েছে। তার উপরে সর্বদল বৈঠকেও বন্‌ধ শিথিল করার আবেদন বারবার উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ে তাই সাধারণ মানুষের রান্নাঘরে এখন আলু পেঁয়াজ চাল আটা পর্যন্ত বাড়ন্ত।

Advertisement

মওকা বুঝে ১০ টাকা কেজির আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। ২০ টাকা কেজি পেঁয়াজের জন্য দিতে হচ্ছে ৪০-৫০ টাকাও। আটা, ময়দার দামও কেজিতে ৫-৭ টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে। এমনকী, সয়াবিন, নুডলস, চিপসের প্যাকেটের দামও দ্বিগুণ চাওয়া হচ্ছে। তা সামাল দিতে দিনভর হিমশিম মোর্চার নেতা-নেত্রীরা। যেমন, মোর্চার নেত্রী তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর সুষমা রাই বলেন, ‘‘১০ টাকার জিনিস ৩০ টাকা, ২০ টাকার আনাজ ৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। কালোবাজারি যারা করছে তাদের কাউকে ছাড়া হবে না।’’

সেই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে, যেটুকু খাবার আসছে, তা আগে মোর্চার নেতাদের ঘরেই পৌঁছচ্ছে। শুক্রবার দার্জিলিং সদরে নারী মোর্চার মিছিলে যোগ দিতে যান বাদামতাম, পানদাম, কাকঝোর বস্তি সহ নানা গ্রামের মহিলারা। তাঁদের অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, কেন শহরের নেতাদের ঘরে আগে জিনিস পৌঁছবে? অনেকেরই অভিযোগ, নানা কৌশলে পাহাড়ে চাল-আটা-আনাজ পৌঁছচ্ছে ঠিকই কিন্তু তার বেশির ভাগই শহরের লোকজন বেশি দরে কিনে ফেলছেন। গ্রামের লোকজনের তাই ভরসা থোড়, স্কোয়াশ, বুনো আলু ও কচু। তাতে দলের নেতাদের উপরে ক্ষোভই বাড়ছে আন্দোলনকারী মহিলাদের।

Advertisement

পাতলেবাস, সিংমারি, হরদাসহাট্টা এলাকার বাসিন্দা কয়েকজন তরুণী শিলিগুড়িতে চাকরি করেন। বাড়ি থেকে তাঁরা খবর পাচ্ছেন, সিকিম, নেপাল কিংবা শিলিগুড়ি থেকে চুপিসাড়ে পাহাড়ে যে পণ্য ঢুকছে, তা নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়েছে। পাহাড়বাসীরা পুলিশ-প্রশাসনকে তা জানিয়েওছেন। তবে আন্দোলনকারীদের চাপে পুলিশ-প্রশাসন সুষ্ঠু ভাবে কাজ করতে পারছে না। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের কাছেও সাধারণ পাহাড়বাসীর দুর্দশার খবর পৌঁছেছে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘মানবিকতার খাতিরে মোর্চার বন্‌ধ তুলে নেওয়া উচিত। রেশনের গাড়িতে যাতে হামলা না হয়, সেটাও নিশ্চিত করা দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন