Death

রেলমন্ত্রীর আওয়াজ কত ফাঁকা, ফের মিলল প্রমাণ

ট্রেনেযাত্রায় বিপদে পড়া যাত্রীদের কাছে কী ভাবে সাহায্য পৌঁছে যাচ্ছে, প্রায়ই তা টুইট করে জানাতে দেখা যায় রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ০২:১৮
Share:

রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।—ফাইল চিত্র।

আপদে-বিপদে যাত্রীদের সাহায্য করার জন্য রেলের তরফে বার বার বিভিন্ন ব্যবস্থা চালু করার কথা ঘটা করে জানানো হয়। কিন্তু তার বেশিটাই যে ফাঁকা আওয়াজ, কলকাতা-ডিব্রুগড় সাপ্তাহিক এক্সপ্রেসের বাতানুকূল কামরায় এক মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় তা ফের প্রমাণিত হল।

Advertisement

ট্রেনেযাত্রায় বিপদে পড়া যাত্রীদের কাছে কী ভাবে সাহায্য পৌঁছে যাচ্ছে, প্রায়ই তা টুইট করে জানাতে দেখা যায় রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে। রেল বা রেলমন্ত্রীর সেই সব দাবি যে কতটা অসার, বৃহস্পতিবার তা টের পেলেন ওই ট্রেনের যাত্রীরা।

রেক সময়মতো না-পাওয়ায় ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস বুধবার নির্ধারিত সময়ের প্রায় তিন ঘণ্টা পরে, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ কলকাতা স্টেশন থেকে ছেড়েছিল। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে নিজের কামরায় দু’সারি আসনের মাঝখানের করিডরে কৃষ্ণা দত্ত চৌধুরী নামে এক প্রৌঢ়াকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন যাত্রীরা। বিষয়টি জানানোর জন্য কর্তব্যরত টিকিট পরীক্ষকের খোঁজ করতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি বলে যাত্রীদের অভিযোগ। রেলের বিভিন্ন নম্বরে ফোন করেও কোনও সাহায্য মেলেনি। পরে অন্য কামরা থেকে টিকিট পরীক্ষক এলেও মহিলার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়নি।

Advertisement

এমনিতে ট্রেনটির ভোর ৪টে নাগাদ মালদহ টাউন স্টেশনে পৌঁছনোর কথা। কিন্তু ছাড়তেই অনেক দেরি হওয়ায় বৃহস্পতিবার সেটি পৌঁছয় সকাল ৬টা ৫০ মিনিট নাগাদ। এমনিতে আজিমগঞ্জ ও মালদহের মধ্যে ট্রেনটি কোথাও থামে না। কিন্তু এ দিন বিশেষ পরিস্থিতিতে ভোরে ওই দুই স্টেশনের মাঝখানের কোনও স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে মহিলার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হল না কেন, সেই প্রশ্নটি বড় হয়ে উঠছে।

রেলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কর্মী কম থাকায় এখন একই টিকিট পরীক্ষককে অনেক কামরায় টিকিট পরীক্ষার ভার নিতে হয়। ফলে যাত্রীদের অভাব-অভিযোগের দিকে তাকিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ প্রায় থাকে না। সাপ্তাহিক ট্রেনগুলির পরিস্থিতি নিয়মিত ট্রেনগুলির তুলনায় আরও খারাপ। ঘটা করে দূরপাল্লার ট্রেনে ক্যাপ্টেন রাখার ব্যবস্থা হলেও যে কাজের কাজ হয়নি, এ দিনের ঘটনায় তা আবার প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। বড় স্টেশনে স্বাস্থ্য কিয়স্ক চালু করেছে রেল। কিন্তু তা যে প্রয়োজনের সময়ে কাজে আসে না, প্রমাণিত সেটাও।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘যাত্রীদের সুবিধায় বড় বড় স্টেশনে চিকিৎসকের ব্যবস্থা থাকে। নিকটবর্তী রেল হাসপাতাল থেকেও চিকিৎসকেরা আসেন। কিন্তু ট্রেনের মধ্যে চিকিৎসক রাখা সব সময় সম্ভব হয় না। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে দ্রুত কাছাকাছি স্টেশনে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হয়। যাতে সেখানে চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত করা যায়।’’

পূর্ব রেলের অন্য এক আধিকারিক জানান, এমন ঘটনা ঘটলে তা কর্তব্যরত টিকিট পরীক্ষকের সঙ্গে সঙ্গে কমার্শিয়াল কন্ট্রোলকেও জানানোর কথা। সেখান থেকেই পরের স্টেশনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটেছে, তা স্পষ্ট নয়। আজিমগঞ্জ ও মালদহের মাঝখানের কোনও স্টেশনে চিকিৎসক ডাকা গেল না কেন, তার সুদত্তর দিতে পারেননি ওই রেলকর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন