West Bengal Pollution Control Board

ভিন্ রাজ্যের বাতাস নিয়ে অব্যাহত দূষণ-বিতর্ক!

মঙ্গলবার সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে,পরিবহণ, নির্মাণস্থল, আবর্জনা পোড়ানো, পাথর খাদান-সহ বিভিন্ন উৎস থেকে যে দূষণ হচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ চোখে পড়ে না পর্ষদের তরফে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:৩২
Share:

এক সাংবাদিক বৈঠকে দূষণ নিয়ে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সাম্প্রতিক অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করেছে পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’। প্রতীকী ছবি।

পশ্চিমবঙ্গের দূষণের ৩০-৫০ শতাংশের জন্য দায়ী ভিন্ রাজ্য থেকে বয়ে আসা বাতাসে ভাসমান দূষক। সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। তাদের বক্তব্য, আইআইটি দিল্লির সমীক্ষায় এই তথ্য ধরা পড়েছে। চলতি বছরে ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং এয়ার পলিউশন’ নামক একটি পুস্তিকাতেও পর্ষদ উল্লেখ করেছে ওই তথ্যের। তা রয়েছে পর্ষদের ওয়েবসাইটেও।

Advertisement

কিন্তু, পর্ষদের এই দাবি নিয়ে যে বিতর্ক শুরু হয়েছিল, তার রেশ চলছে এখনও। পরিবেশ সংক্রান্ত গবেষণা-সংস্থা ‘সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’-এর এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি) অনুমিতা রায়চৌধুরী মঙ্গলবার জানিয়েছেন, আন্তঃরাজ্য দূষণ আলাদা বিষয়। কিন্তু স্থানীয় স্তরের দূষণ যে ট্রান্সবাউন্ডারি দূষণের থেকেও বেশি ক্ষতিকর, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ, এর ফলে সরাসরি ক্ষতি হয়। অনুমিতার কথায়, ‘‘শুধু তা-ই নয়, মোট দূষণের নিরিখে স্থানীয় স্তরের দূষণের ভাগও উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশি। সেই কারণে দূষণের বিভিন্ন উৎস নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় স্তরে জোরদার ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার।’’ যা থেকে স্পষ্ট, রাজ্যে দূষণের উৎস সম্পর্কে পর্ষদের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন না জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে মর্যাদাপ্রাপ্ত এই পরিবেশ গবেষণা-সংস্থার এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টরই।

এ দিন শহরেও এক সাংবাদিক বৈঠকে দূষণ নিয়ে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সাম্প্রতিক অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করেছে পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’। সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে,পরিবহণ, নির্মাণস্থল, আবর্জনা পোড়ানো, পাথর খাদান-সহ বিভিন্ন উৎস থেকে যে দূষণ হচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ চোখে পড়ে না পর্ষদের তরফে। সেখানে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা বাতাস এই রাজ্যের সিংহভাগ দূষণের জন্য দায়ী, এমন অজুহাত দেওয়া হচ্ছে। ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত বলেন, ‘‘দূষণ নিয়ে পর্ষদ যা মন্তব্য করেছে, তাতে আমরা বিস্মিত। সীমান্ত বরাবর গাছ বসিয়ে দূষণ প্রতিরোধের যে কথা তারা বলছে, তা কত দূর বাস্তবসম্মত, সেটা নিয়েও সংশয় রয়েছে।’’

Advertisement

বায়ুদূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। যার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা ও হাওড়ায় বায়ুদূষণ রোধে ব্যর্থতার জন্য রাজ্যকে জরিমানাও করেছিল পরিবেশ আদালত। সুভাষ দত্তের কথায়, ‘‘দূষণের উৎস নিয়ে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ যে যুক্তি খাড়া করার চেষ্টা করছে, তাকে অস্বীকার করছি। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় স্তরে দূষণ নিয়ন্ত্রণের কোনও অর্থ বা গুরুত্বই থাকে না।’’

যদিও এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন, তথ্যের ভিত্তিতে এবং গবেষণালব্ধ ফলাফলের উপরে ভিত্তি করেই পর্ষদ এই কথা বলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন